নড়াইলে সরিষাখেতে মধুচাষ

  25-12-2016 01:06PM

পিএনএস ডেস্ক: নড়াইলে সরিষাখেতে মধুর চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চলতি বছর এ জেলায় সরিষাখেতে মধু চাষের জন্য ১৩টি খামার গড়ে তোলা হয়েছে। বড় ধরণের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর জেলায় রবি শষ্য সরিষার যেমন বাম্পার ফলন হবে, তেমনি খেতের মধু বিক্রি করে এ অঞ্চলের কৃষকেরা লাভবান হবেন।

তবে স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, সরিষাখেতে মধু চাষের জন্য সরকারিভাবে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি , প্রয়োজনীয় পুঁজির যোগান, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং আহরিত মধু বিপননের ব্যবস্থা করতে পারলে এ অঞ্চলে মধুচাষে আরও বেশি সাফল্য পাওয়া যাবে।

সরিষাখেতে মৌমাছি খামার করে মধু চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কবির বিশ্বাস বলেন, সরিষাখেতে মৌমাছি থাকলে তা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ফলন বাড়ে।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, মৌমাছি সরিষার ফুলে যে পরাগায়ণ ঘটায় তাতে সরিষার দানা ভালো হয় এবং ফলনও বাড়ে। যে সরিষাখেতে মৌমাছি থাকে না সে খেতে সরিষার ফলনও কম হয়।

এ বছর নড়াইল জেলার ৪টি থানা এলাকায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। চলতি বছর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় কালিয়া উপজেলায় ১০টি মৌমাছি খামারে দুই হাজারেরও বেশি মধু সংগ্রহের বাক্স গড়ে তুলেছেন কৃষকেরা।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এ এলাকায় আগে এভাবে মধু চাষের প্রচলন ছিল না। গত বছর রোস্তম আলী নামে এক কৃষক সরিষাখেতে মধুচাষ করে লাভবান হয়েছেন। ওই খামার দেখে এলাকার অনেকেই মধু চাষে অনুপ্রাণিত এবং আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

নড়াইল সদর উপজেলার আকদিয়া গ্রামের কৃষক সমশের আলী বলেন, উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আকবর শেখের কাছ থেকে মৌমাছি খামারের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের সরিষাখেতের পাশে মৌ খামারের ১৫টি বাক্স স্থাপন করেছি। গত বছর ১২ হাজার টাকার মধু বিক্রি করেছিলাম। আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক কৃষক সরিষাখেতে মৌ খামার গড়ে তুলছে।

লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের দড়ি মিঠাপুর গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, ৪ বছর ধরে তিনি তার সরিষাখেতের পাশে ২৫টি মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করে আসছেন। গত বছর তিনি থেত থেকে বাড়তি ২৮ হাজার টাকার মধু বিক্রি করেছেন। এ বছরও মৌমাছি খামার থেকে মধু বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন।

নড়াইল কৃষি অধিদফতরের উপ পরিচালক আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, জেলার ৪টি থানা এলাকায় যে পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হয়ে থাকে তার অর্ধেক চাষ হয় লোহাগড়া উপজেলায় । একযুগ আগে থেকেই লোহাগড়া উপজেলায় সরিষাখেতে মধু সংগ্রহের কাজ চলছে। এখানকার কৃষকদের মধু চাষের সাফল্য দেখে জেলার অন্য এলাকার কৃষকেরা মধু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে সরিষাখেতে মধু চাষের সরকারিভাবে পুঁজির যোগান জরুরি হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, বিষয়টি কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামীতে সরিষাখেতে মধু চাষের জন্য কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচি হাতে নেয়া হতে পারে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন