নীলফামারীতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে তেজপাতা

  20-02-2017 02:00PM

পিএনএস, নীলফামারী: নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তেজপাতার চাষ। ব্যাপক চাহিদা ও বাজার মুল্য ভালো থাকায় এ উপজেলার চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে তেজপাতা চাষে। অর্থকরী ফসল হিসেবে এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তেজপাতার চাষ হচ্ছে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। তাছাড়া বাসা-বাড়ীতেও তেজপাতার চাষ হচ্ছে।

ডোমার উপজেলার উৎপাদিত তেজপাতা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। অল্প পরিশ্রমে কম সময়ে বেশি লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা। সেই সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। ডোমার উপজেলার পুর্বছোট রাউতা গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান দুলাল জানান, পাঁচ বছর আগে তিন বিঘা জমিতে ৩০০ চারা গাছ লাগিয়ে প্রথম তেজপাতার চাষ শুরু করেন। দীর্ঘ মেয়াদী লাভজনক ফসল হওয়ায় তার বাগানকে অনুসরণ করে এখন অনেকেই তেজপাতা চাষ শুরু করছে। ব্যবসায়ীরা এসে এসব বাগান থেকেই কেজি প্রতি কাঁচা পাতা ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যায়। এছাড়া চুক্তিতে পুরো বাগানের পাতাও বিক্রি করা যায়।

ডোমার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফর সূত্র জানায়, এ বছর প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে তেজপাতার চাষ হয়েছে। তেজপাতার চারা গাছ রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাতা সংগ্রহ করা যায়। বছরে দুইবার বাগান থেকে পাতা সংগ্রহ করা হয়। চাষীদের উৎপাদিত তেজপাতা স্থানীয় চাহিদা পূরন করে মসলা তৈরির কাঁচামাল ও ওষুধি পণ্য হিসেবে ও সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। অনাবাদি পতিত জমি ফেলে না রেখে তেজপাতার বাগান করছে অনেকেই। কম খরচে বেশি লাভ তাই আগ্রহী হয়ে চাষীরা এখন তেজপাতার চাষে ঝুকছেন।

ডোমার উপজেলার পশ্চিম বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের তেজপাতা চাষী পংকজ রায় জানান, তিন বিঘা জমিতে ৩০০চারা গাছ রোপন করা হয়। বিঘা প্রতি খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। বছরে বিঘা প্রতি তেজপাতা বিক্রি হয় এক লক্ষ টাকার।

হঠাৎ করে কেন মানুষ তেজপাতার চাষে ঝুকছেন এই প্রশ্নটি করা হলে উদ্ভিদবিদ মহিবুল ইসলাম মিলন বলেন, তেজপাতা একটি অর্থকরী ও মসল্লা জাতীয় উদ্ভিদ। এর অনেক ভেষজ গুন আছে। ভেষজ ও ঔষধ হিসেবে তেজপাতার ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের আবহাওয়া তেজপাতা চাষের জন্য উপযোগী। ডোমারে চাষকৃত তেজপাতা অধিক সুগন্ধি এবং ওজনে ভারী। এছাড়া ডোমারের মাটি তেজপাতা চাষের উপযোগী হওয়ায় দিনদিন বেড়েই চলছে এর আবাদ। ফলে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে মসলা তৈরির কাঁচামাল ও ওষধি পণ্য হিসেবেও তেজপাতা সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তাছাড়া তেজপাতা লাগানোর দুই বছরের মধ্যে এর আশে পাশে শাকসবজী আবাদ করাও যায়। তেজপাতা লাভজনক ফসল হওয়ায় মানুষ অন্যান্য ফসলের দিকে না ঝুকে তেজপাতা চাষকেই নিরাপদ ভাবছেন।

ডোমার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মো. জাফর ইকবাল বলেন, ডোমার উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে তেজপাতা আবাদ হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে চার হাজার টাকা আয় হয়। শুধু দেশে নয় বিদেশেও তেজপাতা রপ্তানি হচ্ছে। এ অঞ্চলের মাটি তেজপাতা চাষের জন্য খুবই উপযোগী হওয়ায় এটা ডোমার উপজেলার কৃষকদের মধ্যে নতুন প্রেরণা তৈরি করেছে। ফলে দিন দিন উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন চাষীরা।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন