লাল মরিচের বাম্পার ফলনে যমুনা চরের মানুষের ভাগ্য বদল

  14-03-2017 01:16PM

পিএনএস ডেস্ক: লাল মরিচ চাষ করে বগুড়ার যমুনার চরের মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। এবার ফলন ভালো হয়েছে এবং বাজারে দামও ভালো। তাই লাল মরিচ চাষে চাষীরা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তবে চর এলাকায় এবার আবাদ কিছুটা কমে গেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। তাই যমুনা নদী বারবার ভাঙ্গনে নদী পারের মানুষগুলো সব হারিয়ে হয়েছে সর্বহারা। নানা প্রতিকুলতার মাঝেও নিজেদের টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তারা। উপজেলার অর্ধেকই যমুনার চরে অবস্থিত। এ চরের মানুষগুলো চরে অন্যান্য ফসলের সাথে বন্যার পর মরিচ চাষে মনোযোগ দিয়েছেন।

বগুড়ার যমুনার চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক মরিচের চাষ হয়েছে। বন্যার সময় চরাঞ্চলের পলিপড়া উর্বর জমিতে মরিচের বাম্পার ফলনও পেয়েছে চাষিরা। ফলে মরিচ চাষ করে এলাকার অসংখ্য পরিবার এরই মধ্যে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বেলে-দোঁআশ মাটি মরিচ চাষের জন্য উপযোগি। চরের মাটি বেলে-দোঁআশ হওয়ায় প্রতি বছর ব্যাপক মরিচ চাষ হয়। অর্থকরী ফসল মরিচ চাষ করে কৃষক লাভবান হওয়ায় মরিচ চাষে তারা আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ি, কাজলা, কর্ণীবাড়ি, বোহাইল ইউনিয়ন সম্পূর্ণ এবং হাটশেরপুর, চন্দনবাইশা এবং সদর ইউনিয়ন আংশিক যমুনার চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত। এসব চরগ্রামগুলোতে লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে। চরগ্রামের মানুষের জীবন জীবিকা মূলত কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই যেকোন ফসল উৎপাদনে তারা ব্যাপক পরিশ্রম করে। উত্তাল যমুনা পাড়ি দিয়ে চরগ্রামগুলোতে গেলে দেখা যাবে মাঠের পর মাঠ জমিতে অর্থকরী ফসল মরিচ চাষ করা হয়েছে। উৎকৃষ্ট মানের মরিচ হওয়ায় সারা দেশব্যাপি বগুড়ার সারিয়াকান্দির মরিচের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে এখানে উৎপাদিত মরিচের দাম সব সময় বেশী। বর্তমানে সারিয়াকান্দির মরিচ চাষিরা তাদের উঠানে, নদীর তীরে, বাড়ির পাশে উঠান তৈরী করে রোদে মরিচ শুকিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বাজারে শুনকনা মরিচ বিক্রি শুরু করেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মসুমে জেলায় ৮ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ৭ হাজার হেক্টরে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হলেও ২শ হেক্টর বেশী জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে মরিচ জমি থেকে উত্তোলন ও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বগুড়ার হাটে বাজারে পাইকারী দাম প্রতিকেজি শুকনা মরিচ ১২০ টাকা ও কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা দরে বেচাকেনা চলছে। শুকনা এবং কাঁচা মরিচের বাজার মূল্য ভালো থাকায় মরিচ চাষীরা তাদের খরচ পুঁষিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাহাদুজ্জামান জানান, বন্যার সময় চরে ব্যাপক পলিমাটি পড়ায় সেই উর্বর জমিতে ব্যাপক মরিচ চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষক মরিচ চাষ করায় ব্যাপক ফলন হয়েছে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন