পেয়ারা চাষে ৩ হাজার কৃষকের ভাগ্যবদল

  01-07-2017 09:34PM

পিএনএস : থাই পেয়ারা চাষে বিপ্লব ঘটেছে রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে। বিষমুক্ত পেয়ারা ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে। এতে করে এ অঞ্চলে প্রতিবছর পেয়ারা চাষ বাড়ছে।

চলতি মৌসুমে গেদাগাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে থাই জাতের পেয়ারা চাষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ইস্বরী পুরে ২০১০ সালে প্রথম থাই পেয়ারা চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে মনিরুল নামের এক বেকার যুবক। পরের বছর বেশি জমিতে পেয়ারা চাষ করে ১০ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। মনিরুলের কাছ থেকে থাই পেয়ারা চাষের পদ্ধতি গ্রহণ করে উপজেলার আরও কয়েক জন কৃষক। এরপর থেকেই গোদাগাড়ী উপজেলায় থাই পেয়ারা চাষ সম্প্রসারিত হয়।

কৃষকদের পাশাপাশি জমি লিজ গ্রহণ করে বেকার যুবকেরা বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ করে কর্মসংস্থান ঘটিয়েছে। উপজেলায় ৩ হাজার কৃষক পেয়ারা চাষে জড়িত। বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক প্রাপ্ত মনিরুল বহুমুখী ফসল চাষের পাশাপাশি ১০০ বিঘা জমিতে থাই পেয়ারা চাষ করেছে। প্রতি বিঘায় বছরে ৪০ হাজার টাকা খরচে আয় হয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, থাই পেয়ারা চাষে তাকে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার।

মাঠ পর্যায়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, প্রথম বছর থাই পেয়ারা ফলন কম হয়। তবে পরের বছর থেকে পেয়ারা ফলন বাড়তে থাকে। একটানা ৬ থেকে ৭ বছর পেয়ারার ভালো ফলন পাওয়া যায়। উপজেলার বসন্তপুরের এই কৃষক শাহাদত ১০ বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শাহাদত হোসেন চাকরি না করে জমি লিজ নিয়ে পেয়ারাসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসল বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করে ২০১৬ সাল থেকে।

শাহাদত হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফসল চাষের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছে। সহজে ব্যাংক ঋণ পাওয়া গেলে শাহাদত হোসেন পেয়ারা চাষ সম্প্রসারিত করবে জানান।

গ্রোগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি ২০০ বিঘা জমিতে থাই পেয়ারা চাষ করেছে হেনা মাস্টার। ভালো ফলন হওয়ায় ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার আসা করছে এই পেয়ারা চাষি।

গোদাগাড়ী কৃষি কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি পেয়ারা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। বিশেষ করে উঁচু জমিতে থাই পেয়ারার উৎপাদন ভালো হয়। এ ধরনের জমি বেশি থাকায় গোদাগাড়ী উপজেলায় থাই পেয়ারা চাষ অন্য উপজেলার চেয়ে অনেক বেশি।

কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, পেয়ারা চাষে জৈবসার বেশি ব্যবহার হয়। আর গাছে ফল আসা মাত্রই ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করার কারণে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা না দেয়ায় কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। এ অঞ্চলে উৎপাদিত থাই পেয়ারা বিষমুক্ত হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ পুরো পাওয়া যায়। এজন্য অন্য ফলের চেয়ে থাই পেয়ারার চাহিদা বেশি। এখন স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি থাই পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন