বন্যায় চিরিরবন্দরে কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ক্ষতি

  24-08-2017 09:48PM

পিএনএস, চিরিরবন্দর, (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : ক’দিনের টানা অবিরাম বর্ষণ ও উজার থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় চিরিরবন্দর উপজেলায় অন্তত ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সৃষ্ট বন্যায় ভেসে গেছে প্রায় ১ কোটি টাকারবিভিন্ন পুকুরের পোনা মাছসহ চাষকৃত মাছ। কৃষিক্ষেত্রে অন্তত ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে দুর্যোগের শিকার হয়েছে অন্তত ৫০ হাজার পরিবার।

এরই মধ্যে বন্যায় পানিতে ৫৫টি পাকা, ১ হাজার ৪৪০টি আদা-পাকা, ৮ হাজার ৬০০টি ক৭াচা, ৫ হাজার ৫০০টি বাড়িঘর বিলীন এবং ৮ হাজার ৬০০টি কাঁচা, ৫ হাজার ৫০০টি বাড়িঘর বিলীন এবং ৮ হাজার ৭০০টি আংশিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্ভাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আহমেদ জানান, বন্যার পানিতে উপজেলার পাঁকা রাস্তার ১২২ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ কিলোমিটার এবং কাঁচা রাস্তা ৬৬৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৬০০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে অনেক স্থানে বন্যার পানি নিস্কাশনের জন্য স্থানীয় লোকজন রাস্তা কেটে দেয়ায় কোন কোন সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও বন্যার পানির তোড়ে ড্রেন-কালভার্টেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে সড়কে ২১ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার এবং বাঁধের ৪ কোটি ৯৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ওদিকে বন্যার পানির তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়া দিনাজপুর-পার্বতীপুর, রাণীরবন্দর-চিরিরবন্দর, আমবাড়ি-চিরিরবন্দর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এছাড়াও চিরিরবন্দর থেকে মন্মথপুর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটারের ৪৮টি স্থানে ক্ষিপার সরে গিয়ে রেললাইনের নিচের ৫ ফুট কওে মাটি সওে গেছে। পাথরের কোন অস্তিত্ব নেই ওই রেলপথের। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার জানান, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অন্তত ৮৬০ হেক্টও জমির পুকুরের পোনা মাছসহ চাষকৃত আনুমানিক ১০ কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বন্যার পানিতে উপজেলার অন্তত ৭ হাজার ১২১ হেক্টর জমির আমনক্ষেত এবং ২০০ হেক্টর জমির বীজতলা এবং ৫ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত ক্ষতির শিকার হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা জানান, বন্যায় আক্রান্তদেও বিনামূল্যে খাওয়ার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

বন্যায় আনুমানিক ৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলা জন-স্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে উপজেলায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্রাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা আলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আহসানুল রহ মুকুল জানান, দলীয়ভাবে সরকারী ত্রাণ কার্যক্রম আরো সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা পুরো উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বন্যার সার্বিক চিত্র দেখে ত্রাণ কার্যক্রম আরো বেশি কিছুদিন চালু রাখার পরামশ প্রদান করেছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. গোলাম রব্বানী জানান, সরকারিভাবে উপজেলার বানভাসীদের জন্য এ পর্যন্ত ৭৮ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, তিনি আরো বলেন, ক্সতিগ্রস্থ প্রতিটি পরিবার যতক্ষণ পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা পাবে না ততক্ষষ পর্যন্ত ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রত্যেকটি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে পয়োজনে খুঁজে বের করে ত্রাণ সহায়তা প্রদাণ করা হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি’র নির্দেশে উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পাড়াভিত্তিক তালিকা কওে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা আলীগসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীগন নিবিড়ভাবে তদারকি করছেন। এরপরে পুরাপুরি ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ির মালিকের ছবিসহ বাড়ির ছবি তুলে নেয়া হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি কর্মকর্তাদেও তদারকির মাধ্যমে বর্ন্যাতদেও মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। কোথাও কোন অনিয়ম হচ্ছে না।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল




@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন