চাহিদার দ্বিগুণ মাছ উৎপাদন হয় লক্ষ্মীপুরে

  04-09-2017 11:50PM

পিএনএস ডেস্ক: দিনদিন মাছ উৎপাদনেও উৎসাহী হয়ে উঠছে লক্ষ্মীপুরের মানুষ। খাল-বিল, পুকুর ও প্লাবনভূমি পরিকল্পিত ও বাণিজ্যিকভাবে করা হচ্ছে মাছের চাষ। স্থানীয়ভাবে চাহিদার প্রায় ৬২ শতাংশ বেশি মাছ উৎপাদন হয় লক্ষ্মীপুরে। যা মোট চাহিদার দ্বিগুণ।

লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫২১টি মৎস্য খামার রয়েছে। নারী-পুরুষ মিলে ৫৪ হাজার ১২৫ জন মৎস্য চাষী রয়েছে। মাছ চাষ করে নিজের অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তারা। এছাড়াও সৃষ্টি হয়েছে যুব সমাজের জন্য অসংখ্য কর্মসংস্থান। এখানে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত আছেন ৪৫ হাজার ৭৭১ জন। আইডিকার্ড ধারী জেলে সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৬৯ জন। তবে জেলায় ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষে এগিয়ে রয়েছে।

এ পেশায় জড়িতরা জানায়, জেলার চাহিদা মেটাতে এক সময় খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর, ফরিদগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা থেকে ট্রাক ভর্তি চিংড়ি, তেলাপিয়া, পাঙাস, রুই কাতল ও মৃগেলসহ বিভিন্ন মাছ আমদানি করা হতো। স্থানীয়ভাবে মাছের উৎপাদন বাড়ায় রূপ অনেকটা পাল্টে গেছে। এখনো উন্নত জাতের কিছু মাছ আমদানি হলেও সিংহভাগ চাহিদা পূরণ হয় স্থানীয়ভাবে। আর উদ্বৃত্ত মাছ বেপারীর সরবরাহ করছে পার্শ্ববর্তী জেলায়। এতে দেশে মাছের ঘাটতি পূরণেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

জনসংখ্যা অনুযায়ী প্রতি বছর জেলায় মাছের চাহিদা ৩৭ হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টন। জেলায় বছরে গড় ৬১ হাজার ৪১৫ দশমিক ৩১ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। চাহিদার তুলনায় ২৩ হাজার ৫৫০ দশমিক ৩১ মেট্রিক টন বেশি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। যা মোট চাহিদার প্রায় ৬২ শতাংশ বেশি।

এর আগে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে মাছের উৎপাদন ছিল ৪৪ হাজার ১৪৩ মেট্রিক টন। এরপরের ২০১৪-১৫ বছরে ৫২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন, তারপর ২০১৫-১৫ অর্থ বছরে তা বেড়ে ৬০ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয় লক্ষ্মীপুর জেলায়। চলতি বছর এসব রেকর্ডকে হার মানিয়ে মাছ উৎপাদন বেশি হয়েছে। এর মধ্যে মেঘনা নদীতেই ধরা পড়ে ২০ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ। এছাড়া চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে ৯১ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন। বাকী সব মাছ জেলার বিভিন্ন মৎস্য খামারসহ বিভিন্ন জলাশয়ে উৎপাদন হয়ে থাকে।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে মাছ উৎপাদনে অনেক সরকারি, বেসরকারি হ্যাচারি ও নার্সারি গড়ে উঠেছে। তবে বেসরকারি হ্যাচারি ও নার্সারির সংখ্যা বেশি এখানে। জেলায় সরকারি হ্যাচারি একটি। বেসরকারি হ্যাচারি ১৩টি। এর মধ্যে সরকারিভাবে ১টিই কার্প হ্যাচারি। বেসরকারি কার্প হ্যাচারি ৭টি ও ৫টি মনোসেক্স তেলাপিয়া রেনু উৎপাদনকারী হ্যাচারি। (ডিম থেকে রেনুতে পরিণত হতে ২৭ দিন সময় লাগে)

স্থানীয় খামারিরা জানায়, রেণু-পোনাসহ অধিক পরিমানে মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে এ জেলায়। এ হিসেবে এখানে মাছের দামও কম। খামারীদের মাছ ও রেণু-পোনা এখানকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে।

তারা আরও জানায়, অধিকাংশ পুকুরে এখনো বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে না। এসব পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ করা হলে দেশের চাহিদা মেটানোসহ জেলার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব।



পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন