কৃষকদের গোলায় উঠবে আমন ধান

  05-10-2017 07:38PM

পিএনএস, গাইবান্ধা প্রতিনিধি : এবারের দ্বিতীয় দফা বন্যায় গাইবান্ধা সদরসহ সাতটি উপজেলায় ২১ হাজার ৬২৩ হেক্টর জমির আমন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আশা করছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, সার ও সেচের কোনও সঙ্কট হবে না।রোগবালাই থেকে ফসল বাঁচাতে ব্যাপক তৎপরতা চালানো হয়েছে। এ মাসের মাঝামাঝিতে কৃষকদের গোলায় উঠবে আমন ধান।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও সাদুল্যাপুরসহ সাতটি উপজেলায় ২৭ হাজার ১৬৭হেক্টর জমিতে থাকা রোপা-আমন, আউশ, শাক-সবজি, আমন বীজতলা ও কলাক্ষেতে পানি প্রবেশ করে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে ২১ হাজার ৬২৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। এতে কৃষকদের অন্তত ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এর মধ্যে শুধু আমনের ক্ষতি হয়েছে ২০ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির বিপরীতে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকার ।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুণর্বাসনে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২ কোটি ৫৫ লক্ষ ২৬ হাজার ৭০০ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা ২১ হাজার ১৮০ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ফসল চাষের জন্য বীজ ও সার বিতরণ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালনক (ডিডি) রুহুল আমিন বলেন, গত ১৫ জুলাই থেকে রোপা আমন রোপন শুরু হয় এবং শেষ হয় সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে রোপা আমন ফসল কর্তন শুরু হবে। এবার জেলায় ৮৬ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

জমিতে বন্যার পানি থাকায় চাষ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমি। মোট ফলন হয়েছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৬ মেট্রিকটন চাল। এবার মোট জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩০ মেট্রিকটন।

পলাশবাড়ি উপজেলার পবনাপুর গ্রামের চাষী আব্দুস সালাম জানান, অতিকষ্টে ধার-দেনা করে ৩ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করছিলেন। বন্যায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যায় ধান আমন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি এখন দেনাদারের ভয়ে আছেন।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের কাজিয়ার চর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, তিনি এক বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষের জন্য রঞ্জিত জাতের চারা কিনেছেন। প্রতি পোণের দাম নেওয়া হয়েছে ৫০০ টাকা। একই উপজেলার হরিপুর গ্রামের কৃষক আইয়্যুব আলী বলেন, তিনি গত বছর রঞ্জিত আগাম জাতের প্রতি পোণ ধানের চারা বিক্রি করেন ৩০০ টাকায়। এবার সেই চারা বিক্রি করেছেন ৫০০ টাকা দরে।

অন্যদিকে কৃষকদের মাঝে আগাম জাতের রোপা আমন বিনা-৭ ও ব্রি-৪৯ ধান চাষ খুশির খবর বয়ে নিয়ে এসেছে। মাঠে মাঠে এখন আগাম জাতের বিনা-৭ ও ব্রি-৪৯ ধান গাছের শীষ বেরিয়েছে। বন্যায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আগাম জাতের এ দুটি ধানে আশার আলো দেখছেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের ফাঁসিতলা এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ব্রি-৪৯ ধান চাষ করেছেন। ক্ষেতের ধান প্রায় পাঁকা শেষ পর্যায়ে । এ সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটবেন। তিনি জানান, বন্যায় তার দেড় বিঘা জমির রোপা আমন নষ্ট হয়েছে। উঁচু জমিতে এ ধান চাষ করায় বন্যায় ডুবে যায়নি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন