শেরপুরে পানিতে লুটোপুটো খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

  23-10-2017 10:23PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা : চারদিকে শোভা পাচ্ছিল মাঠ ভর্তি আমন ধানের ক্ষেত। সোনা মাখা রঙ ধারণ করতে শুরু করেছে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের ধানক্ষেত। এছাড়া আগাম জাতের ধান পাকা শেষে কেবল কাটার অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন কৃষক পরিবারগুলো।

এ অবস্থায় এই আমন ধান নিয়ে কৃষক সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতির কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়ার স্বপ্নে ছিলেন বিভোর। কিন্তু কৃষকের সেই স্বপ্ন ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে। পানিতে লুটোপুটো খাচ্ছে তাঁদের সেই স্বপ্ন। কেননা গেল দুইদিনের ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় শত শত বিঘা আমন ফসল ও সবজি ক্ষেত মাটির সঙ্গে মিশে পানির মধ্যে হাবু ডুবু খাচ্ছে। ফলে আমন ধানে চিটা হয়ে ফলন কমে যাওয়া ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতের কর্তাদের দাবি, ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণ হলেও আমন ফসল ও সবজি ক্ষেতের তেমন কোন ক্ষতি হবে না।

স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ১৯হাজার ৫০০হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। এছাড়া ১হাজার ৮০হেক্টর জমিতে রকমারি সবজি চাষ হয়েছে। গেল দুইদিনের ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে এসব জমির ফসল কমবেশি ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শাহবন্দেগী, মির্জাপুর, বিশালপুর, কুসুম্বী, গাড়ীদহ, খামারকান্দি, সুঘাট, সীমাবাড়ী ও ভবানীপুর ইউনিয়নে লাগানো শতশত বিঘা আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমির আমন ধান কাদামাটির সঙ্গে লেপ্টে গেছে। কিন্তু কিছুই করতে পারছেন না। কেবলই ছাতা মাথায় জমির আইলে বসে হা হুতাশ করছেন।

সাধুবাড়ী গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানী জানান, এখনও আমন ক্ষেতের মধ্যে পানি জমে রয়েছে। দ্রুত পানি না সরলে শীষ ফলার আগেই যেসব জমির ধান মাটিতে মিশে গেছে সেসব জমির ধানে চিটা হবে। আর আধা পাকা জমির ধানগুলো পচে নষ্ট হয়ে যাবে বলে তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন। এ

কইভাবে গাড়ীদহ এলাকার সবজি চাষি রফিকুল ইসলাম ও শাহীন আলম জানান, এ উপজেলার অর্ধশত গ্রামে বছরজুড়েই সবজি চাষ হয়। এসব গ্রামের অধিকাংশ সবজি ক্ষেতে এখন হাটুপানি। ফলে নিচু এলাকায় লাগানো শিম, কপি, মূলা ও বেগুন গাছ মরে যাচ্ছে। এছাড়া সবজি ক্ষেত থেকে শিগগিরই পানি না সরলে চাষিদের আরও সর্বনাশ হয়ে যাবে তারা জানান। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান বলেন, ঝড়ো হাওয়া ও অতিবৃষ্টিতে ৭০০হেক্টর আমন জমির ফসল ও ১০-১২ হেক্টর সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেলেও তেমন ক্ষতি হবে। ইতিমধ্যেই সূর্যের দেখা পাওয়া গেছে। অধিকাংশ জমির পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন