শেরপুরে কৃষকের ঘরে নতুন ধান তোলার উৎসব

  10-11-2017 08:07PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা : বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় চলছে নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব। বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াইয়ের পর শত দুঃখ-কষ্ট ভুলে চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে কৃষকরা আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। ভাল ফলনের পাশাপাশি নতুন ধানের দামও ভাল পাচ্ছেন তারা। এদিকে গেল বৃহস্পতিবার (০৯নভেম্বর) চলতি মৌসুমের আমন ধান কাটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। কৃষি অধিদফতর বগুড়ার অতিরিক্ত পরিচালক মতিয়ার রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ধান কাটা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ১৯হাজার ৫০০হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়। সে মোতাবেক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭০হাজার মেট্রিকটন ধান। তবে আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এই কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, এবার আগাম জাতের বিনা-৭ জাতের ধান প্রতিবিঘায় ১৫ থেকে ১৮মণ এবং বিআর-৪৯ জাতসহ অন্যান্য ধান ২০থেকে ২৫মণ হারে ফলন হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে নতুন ধানের দামও বেশ ভাল থাকায় কৃষক খুশি বলে জানান কৃষি কর্মকতা খাজানুর রহমান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরেন্দ্র এলাকা বলে খ্যাত উপজেলার গাড়ীদহ, মির্জাপুর, বিশালপুর, শাহবন্দেগী, ভবানীপুর, কুসুম্বী ও খামারকান্দি ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আমন ধান কাটতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আর কৃষাণীরা সেই ধান মাড়াইয়ে বাড়ির উঠনে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। বৈরী আবহাওয়া, দু’দফা বন্যা আর শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এবার ফলনের দিক থেকে অন্যান্য বছরের তুলনায় রেকর্ড ভেঙেছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন।

এছাড়া দামও ভাল পাচ্ছেন বলে জানান তারা। বিশালপুর এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক, শহিদুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী জানান, জমিতে লাগানো আগামজাতের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার আমন ধানের ফলনও ভালই হচ্ছে। হেক্টর প্রতি ৪৫ থেকে ৫০মণ হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া পুরোপুরি ধান-কাটা মাড়াই এখনও শুরু হয়নি। সপ্তাহখানেক পর পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে।

খোরশেদ আলম, আল আমিন ও মো. তারেক হাসান বলেন, এবার প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। ধান লাগানোর কিছুদিন পরেই জমিতে নানা রোগ-বালাইয়ের আক্রামন শুরু হয়।

এছাড়া বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দুইদিনের টানা বর্ষণে সিংহভাগ জমির ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ফসল ঘরে তোলার আগমুহূর্তে ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়। এরপরও এবার ধানের ফলন হচ্ছে। দামও মোটামুটি ভাল থাকায় লাভবান হতে পারবেন বলে আশাবাত ব্যক্ত করেন তারা।

এদিকে স্থানীয় হাট-বাজারগুলো খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিমণ বিনা-৭ নতুন ধান ৮৮৫ থেকে ৯২০টাকা, পাইজাম ১০৫০ থেকে ১১২০ টাকা, স্বর্ণা-৫ ধান ৮৭০ থেকে ৯০০টাকা, সম্পা-১০৮০ থেকে ১১০০টাকা, ধানি গোল্ড-৮৯০ টাকা, বিআর-৪৯ জাতের ধান ১০০০ থেকে ১০৫০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন