মুরগির দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে বগুড়ার খামারিরা

  29-11-2017 01:14PM

পিএনএস ডেস্ক: শীত শুরু হতেই বগুড়ার বাজারে হঠাৎ ব্রয়লার-লেয়ার মুরগির দাম পড়ে যাওয়ায় খামারিরা বেকায়দায় পড়েছেন। বেশি দামে কিনে কম দামে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। সবজির দামে মুরগি বিক্রি করায় আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছেন এখানকার খামারিরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুঁজি সঙ্কিটে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কারণ হিসেবে চাহিদার চেয়ে অধিক উৎপাদন এবং বাজারের মাছ বেশি থাকায় মুরগির বাজার পতন হয়েছে। বাজারদর এমন চলতে থাকলে বহু খামারিরা ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে বেকার হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, বগুড়া জেলার ১২ উপজেলায় মোট ৬ হাজার মুরগির খামার আছে। এসব খামারের মধ্যে ১ সহস্রাধিক খামারে বয়লার, ৫ শতাধিক লেয়ার জাতসহ বিভিন্ন জাতের মুরগি উৎপাদন করে থাকে। এসব খামারি মুরগির মাংস উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ডিম ও বাচ্চা উৎপাদন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় বাজারে বিক্রি করে আসছে।

বগুড়ার রাজা-বাজার, ফতেহ আলী বাজারে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে বয়লা প্রতি কেজি ৮৫-৯০ টাকা এবং সোনালি পাকিস্তানি জাতের ১১০-১১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। শীত মৌসুম শুরু আগে থেকেই বাজারে বয়লার-লেয়ারসহ অন্যান্য জাতের মুরগির দাম কমতে থাকায় বিক্রি উপযোগী মুরগি নিয়ে বগুড়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা।

বগুড়া সাবগ্রাম এলাকার মুরগির খামার মালিক শামছুল আলম জানান, তিনি ৪৫-৫০ টাকা দরে একেকটি ব্রয়লারের বাচ্চা কিনেছিলেন। একেকটি বাচ্চা বড় করতে সময় লাগে ৩০-৪০ দিন। বাচ্চা থেকে দেড় কেজি ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি করতে তিন কেজি খাবার দিতে হয়। এছাড়া ওষুধ, বিদ্যুৎ ও লোকবল খরচ। সব মিলিয়ে একেকটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে মোট খরচ হচ্ছে ১৩০ টাকা। অথচ বাজারে গিয়ে দাম পাওয়া যাচ্ছে ১১০ টাকা কেজি।

তিনি বলেন, প্রতিটি বয়লারে ২০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। খামারে বর্তমানে পাঁচ হাজার বিক্রয়যোগ্য ব্রয়লার মুরগি থাকলেও দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি করতে না পারায় হতাশায় পড়েছে।

এছাড়া সব খামারি বাজারে গিয়ে সরাসরি মুরগি বিক্রি করতে পারেন না। এজন্য তাদের ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের শরণাপন্ন হতে হয়। ফলে তারা আর্থিকভাবে আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, পাইকারি ব্যবসায়ীরা খামারিদের কাছ থেকে ব্রয়লার মুরগি কিনছেন ৭০-৭৫ টাকা এবং পাকিস্তানি জাতে মুরগি ৯০-৯৫ টাকা প্রতি কেজি। এই দামে মুরগি বিক্রি করে মুরগির খাবারের টাকা উঠছে না।

বগুড়া পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুক্তার জানান, বগুড়ায় ব্রয়লার, লেয়ার এবং সোনালি মুরগি মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বগুড়ায় বাজারে সব ধরনের মুরগির দাম কমে যাওয়ায় অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করতে পারছেন না।

চাহিদার অধিক মুরগি উৎপাদন এবং বগুড়ার বাজারে ব্যাপক মাছ সরবরাহ থাকায় বাজারে এখন সবজির দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বগুড়ার পোল্ট্রি খামারিরা আর্থিকের পাশাপাশি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছেন।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন