তানোর হিমাগারে ১৪ কোটি টাকার অবিক্রিত আলু, বিপাকে কৃষক

  29-11-2017 05:27PM

পিএনএস, তানোর (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোরে আমান ও রহমান দুই কোল্ডস্টোরে চাষীদের প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার বস্তা আলু অবিক্রিত অবস্থায় হিমাগারে পড়ে আছে। এসব আলুর বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তানোর হিমাগার (কোল্ডস্টোর) মালিক ও চাষীদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তারা বলছেন, গত মৌসুমে অধিক আলু উৎপাদন হওয়ায় এখন বাজারে আলুর তেমন চাহিদা নেই। দামও নিম্নমুখি। এছাড়া কাক্সিক্ষত হারে আলু রফতানি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাপক আর্থিক লোকসানের আশঙ্কায় পড়েছেন চাষীরা।

হিমাগার মালিক ও আলুচাষীরা জানান, কিছুদিন থেকে নতুন আলু রোপণ মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ আলু কয়েক সপ্তার মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে তা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এখন আলু প্রকার ভেদে গড়ে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা। আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত গত বছরের আলু রাখার সময়সীমা রয়েছে হিমাগরে। এ হিসাব মতে অবিক্রিত অবস্থায় যে পরিমাণ আলু দুইটি হিমাগারে থেকে যাবে তার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আলুচাষীরা।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। তাই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত একটি ফসলের আয় থেকে পরের মৌসুমের ফসল উৎপাদন করে থাকেন। তানোর উপজেলার প্রধান ফসল ধানের পরই আলুর অবস্থান।

রাজশাহী কোল্ডস্টোর অ্যাসোসিয়েশন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রহমান গ্রুপের মালিক ফজলুর রহমান জানান, শুধু তানোর উপজেলায় নয় রাজশাহীর সব হিমাগারে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ বস্তা আলু মজুদ রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য একশ কোটি টাকা হবে। এ পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে একদিকে যেমন চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অন্যদিকে হিমাগার মালিকদেরকে ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে।
তানোর ইলামদহী গ্রামের আফজাল কারিগর জানান, এবার ৫০০বস্তা আলু সম্পূর্ণটায় কোল্ডস্টোরে রেখেছেন। কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্যে তার বস্তা প্রতি প্রায় ৪০০ টাকা করে লোকসান হওয়ায় তিনি ওই গচ্ছিত আলু স্টোর থেকে তুলার তো দূরের কথা তিনি স্টোরেই জাননি বলে জানান।

তানোর উপজেলা ক্যাম্পাসপাড়ার খাইরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমানসহ একাধিক কৃষক জানান, স্টোর থেকে লোন নিয়ে তারা এবারে জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। প্রতি বিঘা জমি ভাড়া নিয়েছিলেন ৬ হাজার টাকা দরে। অর্ধেক আলু জমিতে বিক্রি করলেও এখনও অর্ধেক আলু রয়েছে কোল্ডস্টোরে। তাতে লোকসান হয়ে পথে বসার উপক্রম বলে মনে করছেন তারা।

এ বিষয়ে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে দুই হিমাগারের মজুদকৃত আলুর পরিমাণ রিপোর্ট আকারে কৃষিমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত আমরা পায়নি। সিদ্ধান্ত পেলে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন