স্ট্রবেরি চাষে হাতীবান্ধার ২০ নারী

  09-12-2017 09:43AM


পিএনএস ডেস্ক: কে না চায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে? স্বচ্ছল ভাবে জীবনযাপন করতে। নিজের উপার্জনে চাহিদা মেটাতে। আর সেটা যেই হোক নারী কিংবা পুরুষ। কেউই আর পিছিয়ে থাকতে চায় না। বর্তমানের আধুনিকতার ছোয়ায় সব কিছুর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় নারী পুরুষের সকলের মাঝে একটা পরিবর্তন। কিছু করার, সামনের এগিয়ে যাওয়ার। তবে সেদিক থেকে শহরের নারীদের থেকে গ্রামের নারীরা একটু আলাদা। শহরের নারীদের চেয়ে গ্রামের সিংহভাগ নারী অনেকটা পিছিয়ে। কিন্তু তথ্যপযুক্তির ছোয়ায় গ্রামের নারীরাও শিখে গেছে শহরের নারীদের মত তাদেরও কিছু একটা করতে হবে। পরিবার বা পুরুষের উপর নির্ভর করে আর নয় নিজের পায়ে দাঁড়াতে অনেকটা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। পুরুষের সাথে সমান ভাবে তাল মিলিয়ে চলতে।

এমনই কয়েকজন নারী রয়েছেন উত্তরের জেলার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় উপজেলার বড়খাতা এলাকার। ওই এলাকার ২০ জন নারী নিজের ভাগ্য বদলানোর লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন স্ট্রবেরি চাষের। নিজের পায়ে দাঁড়াতে, পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে, চাহিদা পূরনে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে তারা এই উদ্যোগ করেছেন।

আর তাদের এই লক্ষ্য পূরনে স্বপ্ন দেখিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সদস্য মর্জিনা বেগম। নারীদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে, তাদের নিজের পায়ে দাড়ানোর লক্ষ্যে, পরিবারের বোঝা না হয়ে একজন জীবিকা নির্বাহের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে তার এই উদ্যোগ গ্রহন।

আর এই জন্য উপজেলার বড়খাতা শাপলা ফেডারেশন ওই ২০ জন নারীদের মাঝে জনপ্রতি ৩শ’ পিস করে স্ট্রবেরির চারা বিতরণ করেছে।

তাদেরই একজন খোরশেদা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শুধু শুনেছিলাম, কখনো দেখিনি ও খাইনি। মর্জিনা আপা আমাদের এই ফল চাষের কথা বলেন। প্রথমে না চাইলেও পওে রাজী হই। কারন আমি একা নই আরো বেশ কয়েকজন আছেন। যদি একটু কষ্ট আর চেষ্টা করে এ ফল চাষ করে ভালো মুনাফা পাওয়া যায়। তাহলে হয়তো পরিবারে অনেকটা স্বচ্ছলতা আসবে। পাশাপাশি আমিও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবো। তাই এবার স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

অপর আর একজন শাহনাজ পারভীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই ফল চাষের ব্যাপারে জানার পর অনেকটা সাহস করে আমরা সবাই মিলে স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আশা করি প্রথমবার তেমন লাভ না হলেও লোকসানের মুখ দেখতে হবে না। আর পারিবারের চাহিদা পূরণে তা যথেষ্ট ভুমিকা পালন করবে।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনা বেগম বলেন, এ অঞ্চলের জমিগুলো স্ট্রবেরি চাষে উপযোগী, কিন্তু কেউ চাষাবাদ করে না। তাই আমি কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু নারীকে স্ট্রবেরি চাষে উৎসাহ দিতে থাকি। তাদের মধ্যে ২০ জন নারী স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করলে স্থানীয় শাপলা বড়খাতা ফেডারেশনের মাধ্যমে তাদের স্ট্রবেরি চাষের জন্য সহয়োগিতা করা হচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের কৃষি ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।

এ বিষয়ে শাপলা বড়খাতা ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ সফিয়ার রহমান বলেন, নারীদের কৃষিতে আগ্রহী করার জন্য, তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে ও পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে স্ট্রবেরি চাষের জন্য ওই ২০ নারী চাষীকে নির্বাচিত করেছি। জন প্রতি ৩শ’ চারা করে মোট ২০ জনের মাঝে ৬ হাজার স্ট্রবেরির চারাসহ সার ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস তারা স্ট্রবেরি চাষে সফলতা পাবে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ আলী বলেন, এ এলাকার মাটি স্ট্রবেরি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু কেউ তেমন বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করছে না। তারা যে উদ্যোগ নিয়েছে অবশ্যই এতে তারা লাভবান হবে বলে তিনি আশা করেন। এছাড়াও কৃষি অধিদফতর তাদের সফলতার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন