মহাদেবপুরে আলু ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

  13-12-2017 06:37PM

পিএনএস, নওগাঁ প্রতিনিধি : আলু ক্ষেতে পানি দেয়া, কীটনাশক প্রয়োগ, নিড়ানি দেয়াসহ আলু ক্ষেত পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের কৃষকরা। আলুর দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকা সর্তেও কৃষকরা থেমে নেই আলু চাষ থেকে। আগাম লাগানো আমন ধান কর্তনের পর এখানকার কৃষকরা জমি পতিত রাখে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায়বছরের পর বছর যে জমিগুলো পড়ে থাকত গত কয়েক বছর ধরে সে জমিগুলোতে আগাম জাতের আলু চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকরা ।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেকটি আলু চাষী অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। জানা গেছে, এ বছর উল্লেখযোগ্য পরিমানে স্থানীয় ও উন্নত জাতের ষাঁটা আলু চাষ করেছেন এ উপজেলার কৃষকরা । এই আলুর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হচ্ছে, রোপনের মাত্র ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করতে পারেন কৃষকরা । এর ফলে বাজারে এ আলুর ভালো দাম পাওয়া যায় । বিগত বছরের মত এবার আলুর রোগ বালায় কম হওয়ার গাছ ভাল হয়েছে।

ফলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা । কৃষকদের মতে, ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৫০-৫৫ মণ আলু পাওয়া যাবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা। আর ১ বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা। মাত্র ২-৩ মাসের মধ্যে অধিক টাকা লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকরা । উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০ ইউনিয়নে এবার ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে এবার কৃষকরা ১ হাজার হেক্টর জমিত আলু চাষ করেছেন।

এর মধ্যে ১৪৪ হেক্টর জমিতে কুফরী সুন্দরী, ১২০ হেক্টর জমিতে কাডিনাল, ১০০ হেক্টর জমিতে ডায়মন্ড, ৬০ হেক্টর জমিতে গ্রানোলা, ৪০ হেক্টর জমিতে ফেনসিলা, ৪১০ হেক্টর জমিতে স্থানীয়সহ উন্নত জাতের ষাঁটা ও ১২৫ হেক্টর জমিতে হাগরা জাতের আলুর চাষ হয়েছে। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও এবার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় নি। উপজেলার নাটশাল গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন জানান, গত বছর ৩ বিঘা জমিতে তিনি আলু চাষ করেছিলেন। এবার চাষ করছেন ৫ বিঘা। তিনি বলেন, আলু চাষে খরচ কম লাভ বেশি।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফসল ঘরে তুলতে পারবেন এমনটাই আশা ব্যক্ত করেন তিনি। উপজেলার চকদৌলত গ্রামের কৃষক আজিজ জানান, গত বছর হিমাগারে আলুর বীজ রেখে ভালো মানের বীজ পেয়েছেন। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করছেন। এখন পরিচর্যার কাজ চলছে। একই গ্রামের কৃষক তারেক রহমান বলেন, গত বছর ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে খরচ সেরে ৪৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন। আশা করছেন এবার তার চেয়ে বেশী লাভ হতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ কে এম মফিদুল ইসলাম জানান, কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ইউনিয়নের প্রতিটি ব্লকে কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক ও রোগ বালাই সম্পর্কে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন করছেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন