মহাদেবপুরে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

পিএনএস, নওগাঁ প্রতিনিধি : দেশের উত্তর জনপদের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজ ধানের সোনালি শীষের সমারোহ। ধানগাছগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার, কীটনাশকসহ বাজারে কৃষি উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহ, সহনশীল দাম, সহজলভ্যতা, সেচের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের সরবরাহসহ আবাদ উপযোগী পরিবেশ ইত্যাদি বিবেচনায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ২৬ হাজার ২’শ ৪৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর আবাদ হয়েছে ২৭ হাজার ৪’শ ৩০ হেক্টর জমিতে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ১’শ ৮৪ হেক্টর বেশি। এসব জমিতে উৎপাদিত ধানের সোনালি শীষ এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে আগাম জাতের ধানকাটা শুরু হয়ে যাবে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন। উৎপাদনেও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। এবার কৃষকরা বোরো ধানের বীজতলা করেছে আধুনিক পদ্ধতিতে। আলোর ফাঁদ দিয়ে সনাক্ত করেছে ক্ষেতের পোকামাকড়। ব্যবহার হচ্ছে শেড পদ্ধতি। কৃষি অফিসের অত্যন্ত জরিপ কার্যক্রমের আওতায় আনা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া কৃষকদের। ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার। এক কথাই উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক পর্যবেক্ষণ আর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাড়ছে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা।

উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক সাইদুর জানান, ধান ক্ষেতের পাশে দাঁড়ালে বুক জুড়িয়ে যায়। এ বছর তিনি ৪ একর জমিতে বোরো আবাদ করছেন । আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার অধিক ফলন হবে বলেও আশা করছেন তিনি। একই গ্রামের কৃষক ফারুক জানান, সেচ খরচ এবং শ্রমের অধিক মূল্য ও কৃষি শ্রমিকের কিছু সমস্যা থাকলেও অনুকূল আবহাওয়ায় সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত সার, কীটনাশক ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ায় এ বছর বোরো ধানের ফলন খুবই ভালো হবে বলে তিনি আশা করেন।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম মফিদুল ইসলাম জানান, বোরো ধান চাষে কৃষকেরা যাতে লাভবান হতে পারে এবং কৃষকরা কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। বড় কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে কৃষকগণ বোরো চাষে ব্যাপক লাভবান হবে বলেও আশা করছেন তিনি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল