তানোরে বোরো ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমন

  18-04-2018 03:07PM

পিএনএস, তানোর (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোর কামারগাঁ ইউনিয়নের পারিশো মন্ডলপাড়া গ্রামের বেলপুকুর ও দিঘীপাড়া গভীর নলকূপের আশেপাশের বিলে নেক ব্লাস্ট রোগে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের পারিশো, মহাদেবপুর, শ্রীখন্ডা, দমদমা ও কলমা ইউনিয়নের নড়িয়াল,অমৃতপুরসহ বিভিন্ন বিল ও মাঠের ক্ষেতগুলিতেও একই রোগ দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, মনিটরিং করে নেক ব্লাস্ট রোগের প্রতিকারের জন্য ১৬ গ্রাম ট্রুপার বা ১০ গ্রাম নাটিভো বা ২ গ্রাম অটোস্টিন বা নোইন, ৮০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে প্রতি ১৬ লিটার পানিতে মিশিয়ে ২বার করে ৪-৫ দিন প্রয়োগ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ও কৃষক রফিকুল ইসলাম, পারিশো গ্রামের কৃষক রিগান মন্ডল, দমদমা গ্রামের রকেট, অমৃতপুর গ্রামের সেকেন্দার আলী জানান, নেক ব্লাস্ট রোগে তাদের ক্ষেতে ধানের শীষ সাদা হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে তা পুরো জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস পরামর্শে কীটনাশক প্রয়োগ করে ক্ষেতে এই রোগ আর বিস্তার লাভ করেনি বলে জানিয়েছেন বেশিরভাগ কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ১৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবারে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বোরো ক্ষেতে শীষ বের হবার আগে ও পরে হঠাৎ করে বাইকোলারিস অরাইজি ছত্রাক সৃষ্ট নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধান সাদা ও চিটা হয়ে যাচ্ছে। ফসল ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে এ রোগে ধান ক্ষেত আক্রান্ত হচ্ছে।

তাছাড়া রোগাক্রান্ত ফসলের গাছের জীবাণু পোকামাকড় ও বাতাসের মাধ্যমে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে আক্রান্ত করছে। এতে ধানের শীষের গোড়া, পাতা, শাখা-প্রশাখা ও গিট দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ফলে খাদ্য ও পানি না পাওয়ার কারণে পুষ্ঠ হওয়ার আগ মুহূর্তে চিটা হয়ে গেছে ধানের শীষগুলো। পরে আক্রান্ত ধান গাছগুলো প্রথমে সাদা হয়ে পরে কালো বর্ণ ধারণ করে শীষ মারা যাচ্ছে। ধানের এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে উপজেলা কৃষি অফিস প্রাণান্তরকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে তা সমস্ত ক্ষেতে ছড়িয়ে না পড়ে। এর আগে বোরো ধানে এ রোগের এমনভাবে দেখা মেলেনি বলে জানান কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, এটি একটি ছত্রাকনাশক রোগ। ইতিমধ্যে আমরা এ রোগ নিয়ে কৃষক সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করেছি। রোগাক্রান্ত বীজের চাষ, দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় এ রোগের বিস্তারের প্রধান কারণ বলে তিনি মনে করেন। এতে ধান কিছুটা কম উৎপাদন হতে পারে, তবে হতাশগ্রস্থ হবার কোন কারণ নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন