পিএনএস, তানোর (রাজশাহী) সংবাদদাতা : জেলার তানোর উপজেলায় আজ সোমবার সকালে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ঝড়বৃষ্টিতে উপজেলার বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাটের চালা উড়ে গেছে এবং বিদ্যুতের মূল সংযোগ লাইনের ৩টি খুঁটি হেলে পড়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-প্রকৌশলী এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ব্যাপক ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বজ্র্যপাতে হতাহত, ঘরবাড়ির কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জরিপ চলছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা জুড়ে এখন শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার ধুম। বিশেষ করে আগাম জাতের জিরাশাইল, ব্রি-২৮ ও ব্রি ২৯ এরি মধ্যে কাটা ও মাড়ায় চলছে পুরো দমে। ফলনও ভালো হওয়ায় কৃষক এবার স্বপ্ন দেখছিল দু’চোখ ভরে। কিন্তু বাঁধ সাধলো হঠাৎ ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত দেড় ঘন্টাব্যাপি ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে নিচু বোরো ক্ষেত পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ঝড়ের কারণে অনেক ক্ষেতের ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এ নিয়ে কৃষক চরম দু:চিন্তায় পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার শিবনদী সংলগ্ন চৌবাড়িয়া, কামারগাঁ, তালন্দ, গোকুল, শিতলীপাড়া, কুঠিপাড়া, আমশো, বুরুজ, কালীগঞ্জ, চাঁন্দুড়িয়া ও তানোর-চৌবাড়িয়া রাস্তার খাড়ি পার্শ্ববর্তী বোরো ক্ষেতসহ বেশ কিছু নিচু বোরো ধান ক্ষেত পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
উপজেলার বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, ঝড়বৃষ্টির ফলে জমিতে কাটা ধান পানিবন্দী হলে কৃষকের দুর্ভোগ বাড়বে। কারণ পানি নিষ্কাসন না হওয়া পর্যন্ত কৃষক ধান তুলতে পারবে না তার উঠোনে। বেশি দিন পানিবন্দী হয়ে থাকলে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝরে যাওয়ায় ফলনও কম হবে। এছাড়া ধানকাটা শ্রমিক সংকট, ধানক্ষেত পানিবন্দী ও ফলন কম হওয়ার আশঙ্কায় শ্রমিকরা বেশী মজুরি দাবী করছেন বলে জানান তিনি।
উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দীন প্রামানিক জানান, তানোরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। শিবনদীর বুকে রোপিত ধান ক্ষেতে আধাপাকা ধান পাকির ওজনে ( প্রায় ৩৬ কেজিতে মণ) ২০ থেকে ২২ মণ ফলন হচ্ছে। একে তো শ্রমিক সংকট তারপরে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ফসল নিয়ে কৃষক চরম চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডিএমএফ এমদাদুল হক জানান, যে সমস্ত পাকা ধান পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তা দু’এক দিনের মধ্যে পানি সরে গেলে কাটা যাবে। তবে পরে লাগানো ধান ক্ষেত পানিবন্দী হলে রোগ বালাই আক্রান্ত হতে পারে। যে সমস্ত ক্ষেতের ধান এখনও কাটা হয়নি শিলাবৃষ্টিতে ওই সমস্ত ক্ষেতের ধান কিছুটা ঝরে পড়বে এবং ফলনও কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, মাঠে বোরো ধান ভাল হয়েছে। বৈরি আবহাওয়া যদি না থাকে এতে ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, তার অফিসের কর্মকর্তারা কৃষকদের সব সময় ফসল বাঁচাতে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে বলে দাবী করেন এই কর্মকর্তা।
পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল
তানোরে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি চিন্তিত কৃষক!
30-04-2018 06:28PM