ফসল উৎপাদনে জৈব সারের গুরুত্ব!

  12-09-2019 02:03PM

পিএনএস ডেস্ক: জীব দেহ হতে প্রাপ্ত বা প্রস্তুত সারকে জৈব সার বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, পশু পাখির মলমূত্র এবং গাছ পালা অবশিষ্টাংশ যা মাটির উর্বরতার রক্ষা ও ফসলের অধিক ফলনের জন্য ব্যবহার করা হয় তাহাই জৈব সার। গোবর সার, খামার জাত সার, কম্পোষ্ট, আবর্জনা সার, খৈল, সবুজ সার, ছাই প্রভৃতি বহুল প্রচলিত জৈব সার।

জৈব সারের উপকারিতাঃ

১। জৈব পদার্থ হচ্ছে মাটির প্রাণ। জৈব সার ব্যবহারে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ে।

২। জৈব সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা বাড়ে। এতে ফসলের প্রধান খাদ্য নাইট্রোজেন,ফসফরাস, পটাশিয়াম ও অন্যান্য খাদ্য উপাদান থাকে ফলে অণুখাদ্যের ঘাটতিও পূরণ হয়।

৩। জৈব সার মাটির গঠন ও গুণাগুণ উন্নত করে। বেলে মাটি সরস হয়, পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ে, তাছাড়া এঁটেল মাটিকে কিছুটা দো-আঁশ ভাবাপন্ন করে ফসল জন্মানোর অধিক উপযোগী করে তোলে।

৪। মাটিতে জৈব সার ব্যবহারের পর ধীরে ধীরে গাছের প্রয়োজন অনুযায়ী অনেক দিন ধরে তা গ্রহণ করতে পারে। জমিতে প্রয়োগের পর আনুমানিক ৬ -১৮ মাস ব্যাপী এর প্রভাব থাকতে পারে। এতে পরবর্তী ফসলেও কাজে লাগে।

৫। জৈব সার ব্যবহারে মাটির উপকারী জীবাণুর ক্রিয়া বেড়ে যায় এবং এদের বংশ বিসত্মারেও সহায়ক হয়। এতে সহজতর উপায়ে গাছ মাটি থেকে খাদ্য উপাদান গ্রহণ করে দ্রুত বড় হতে পারে।

৬। জৈব সার গাছের শিকড় ও অংগজ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কেচোঁ, পিঁপড়ে, উই পোকা জৈব পদার্থ প্রয়োগ কৃত মাটিতে গর্তের সৃষ্টি করে। এতে শিকড় বেশি পরিমাণে অক্সিজেন পাবার সম্ভাবনা থাকে এবং মাটিতে বায়ু চলাচলে সাহায্য করে। ফলে গাছ সতেজ হয়ে উঠে।

৭। বৃষ্টিপাত জনিত আঘাতের ফলে ও বায়ু প্রবাহজনিত ভূমি ক্ষয় সাধনের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

৮। গ্রীষ্মকালে মাটিতে তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় এবং শীতকালে উষ্ণ রাখতে সহায়তা করে। এতে সব ঋতুতেই গাছের শিকড় বৃদ্ধি পেতে পারে।

৯। মাটিতে রস মজুদ রাখতে সাহায্য করে এবং পানি সহজলভ্য হয়। ফলে সেচের পানির অধিক সদ্ব্যবহার হয়।

১০। জৈব সার রাসায়নিক সারের কার্য়কারিতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং জৈব সার ব্যবহার করলে আণুপাতিক হারে রাসায়নিক সারের মাত্রা কমানো যায়।

১১। মাটিতে কীটনাশক ওষুধ ও রাসায়নিক সারের আধিক্যজনিত কোনো বিষাক্ততা সৃষ্টি হলে জৈব সার ঐ বিষাক্ততা কমাতে সাহায্য করে। জৈব সার বেশি ব্যবহার করলেও মাটির কোনো ক্ষতি হয়না।

১২। জৈব সার ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, এবং গুণগত মান বাড়ায় এবং গুদামজাত শস্যের সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

যতই মাটিতে জৈব পদার্থ বেশি থাকবে ততই মাটির উৎপাদন ক্ষমতা অধিক হবে। সুতরাং যথাসম্ভব অধিক হারে জৈব সার ব্যবহারের প্রচেষ্টা চালানো উচিত।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন