ফরিদপুরে শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি

  04-03-2020 07:23AM

পিএনএস ডেস্ক:ফরিদপুরের নগরকান্দা ও ভাঙ্গায় শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টা হতে ছয়টা পর্যন্ত শিলাবৃষ্টি হয় নগরকান্দা উপজেলার চরযশোহরদী, কোদালীয়া শহীদনগর ও লস্করদিয়া এবং পাশের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গা পৌরসভা, হামিরদী ও ঘারুয়া ইউপিতে।
চরযশোহরদী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান জানান, মঙ্গলবার ভোরে তার ইউপির ৩৬টি গ্রামে অন্তত ২০ মিনিট ধরে শিলা বৃষ্টি হয়েছে। এ শিলা বৃষ্টির কারণে তার ইউপির অন্তত ২৩৪ একর জমির পেঁয়াজ বিনষ্ট হয়েছে। এর ফলে ক্ষতি পরিমাণ কম পক্ষে ১০ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে।

শহীদনগর ইউনিয়নের কৃষক ওবায়দুর জানান, তার দানা পেঁয়াজ ও চারা পেঁয়াজের আবাদ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে শিলা বৃষ্টিতে।

কোদালীয়া শহীদ নগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, শিলাবৃষ্টির কারণে তার ইউপির অন্তত ৫০ একর জমির পেঁয়াজ ও ২৫ একর জমির ইরি ধান বিনষ্ট হয়েছে। পেঁয়াজের দানা বড় হয়ে যাওয়ায় সেগুলো হয়তো তুলে বিক্রি করা যাবে, কিন্তু এটি সংরক্ষণ করা যাবে না। এ শিলা বৃষ্টিতে তার ইউপির কৃষকদের অন্তত এক কোটি টাকার ক্ষতি হবে।

উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের জুঙ্গুরদী গ্রামের কৃষক আলমগীর মোল্লা বিলাপ করে বলেন, শিলা বৃষ্টিতে তার সাড়ে তিন বিঘা জমির পেঁয়াজ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে তার প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষিবিদ মোহাম্মদ বিন ইয়ামিন বলেন, হঠাৎ শিলা বৃষ্টিতে রবি শষ্যসহ উপজেলায় প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি হয়েছে।

ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গা পৌরসভা, হামিরদী ও ঘারুয়া ইউপির ১০টি গ্রামের মাঠের শতাধিক বিঘা পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মঙ্গলবার সকালের শিলা বৃষ্টিতে। আধা ঘণ্টার শিলা বৃষ্টিতে ভাঙ্গা পৌরসভার খাড়াকান্দি, ভাড়ইডাঙ্গা, নূরপুর, হোগলাকান্দি, হাজরাহাটি, বাইশাখালী, কুটিবাড়ি চরকান্দা মহল্লা, হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ, মাঝিকান্দা ও ঘারুয়া ইউপির বগাইল গ্রামের পেঁয়াজ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বগাইল গ্রামের পেঁয়াজ চাষী শেখ শামীম জানান, আর ১৫-২০ দিন পর এ পেঁয়াজ ঘরে উঠানোর কথা। তার আগেই শিলা বৃষ্টিতে তাদের পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।

ভাঙ্গা পৌরসভার ভাড়ইডাঙ্গা মহল্লার অপর পেঁয়াজ চাষি ইসাহাক মোল্লা জানান, শিলা বৃষ্টির কারণে তার পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বাইশাখালী গ্রামের পেঁয়াজ চাষী সৈয়দ আলী বলেন, শিলা বৃষ্টিতে আমার তিন বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে।

ঘারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান সফিউদ্দিন মোল্লা জানান, ঘারুয়া ইউপিতে ব্যাপক পেঁয়াজ চাষ হয়। শিলা বৃষ্টিতে বামনকান্দা গ্রামের পেঁয়াজ চাষিদের ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, শিলা বৃষ্টিতে ফরিদপুরের কিছু অংশে পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫০ হেক্টর জমির হালি পেঁয়াজ বিনষ্ট হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। পেঁয়াজের পাতা ঝরে গেলেও মাটির নিচের পেঁয়াজ কিছুটা রক্ষা করা যাবে। পেঁয়াজ আগাম তুলে বিক্রি করা যাবে। পেঁয়াজের বাল্ব বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করা যাবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন