ঠাকুরগাঁওয়ে লিচুগাছে আম!

  20-04-2021 03:41PM

পিএনএস ডেস্ক : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সিঙ্গিয়া কলোনিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহমানের একটি লিচুগাছে গাছে আম ধরেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। লিচুর থোকায় আম ধরার ঘটনাকে অলৌকিক মনে করে এটাকে একনজর দেখতে বহু মানুষ ভিড় করছেন।

লিচুগাছের মালিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, গাছটি লিচুর গুটিতে ভরা। এর মধ্যে একটি থোকায় ১৭টি লিচুর মধ্যে একটি আম ধরেছে। লিচুর ডগা লম্বা হলেও আমটির বোঁটা অনেকটা ডালঘেঁষা। এটা দেখতে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভিড় করেছেন।

এ ব্যাপারে লিচুগাছটির মালিক আবদুর রহমান বলেন, পাঁচ বছর আগে বাড়ির একপাশে লিচুগাছের চারাটি লাগান। তিন বছর পর গাছটিতে লিচু ধরতে শুরু করে। এবারও গাছটি মুকুলে ভরে গেছে।

তিনি জানান, গত শনিবার সকালে তার নাতি এসে তাকে জানায়, লিচুগাছে একটা আম ধরেছে। নাতির কথা শুনে তিনি প্রথম দুষ্টুমি মনে করেছিলেন। পরে গিয়ে গাছে লিচুর থোকার একপাশে একটি আম দেখে অবাক হন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়ার অলৌকিক ভেবে বহু মানুষ এটি দেখতে ভিড় করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

লিচুগাছে আম ধরার বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ লিচু ও আমের টিস্যু সিস্টেম এক নয়। এজন্য আম ও লিচুর গ্রাফটিংও সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) ও উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র হালদার গণমাধ্যমকে বলেন, লিচু ও আম এক পরিবারের উদ্ভিদ নয়। ক্রোমোজম সংখ্যা যদি এক হয়, তবে অনেক সময় ঘটতে পারে। তবে লিচু ও আমের ক্ষেত্রে এটা অবিশ্বাস্য।

লিচু ও আমের টিস্যু সিস্টেম এক না হওয়ায় আম ও লিচুর গ্রাফটিংও সম্ভব নয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, লিচুর সঙ্গে আমগাছের ডাল জোড়া লেগেছে, এমন উদাহরণ নেই। উদ্ভিদতত্ত্বে এর কোনো ব্যাখ্যা নেই।

অধ্যাপক বিধান চন্দ্র আরও বলেন, কেউ যদি আঠা দিয়ে লিচুর ডালে আমটি লাগিয়েও দেয় তাহলে আমটি কয়েক দিনের মধ্যে ঝরে পড়বে। আর আমটি যদি বড় হতে থাকে, তখন সেটাকে অস্বাভাবিক ঘটনা বলা যেতে পারে। তখন এটা নিয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে।

দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এমএসসির শিক্ষার্থী মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আম ও লিচু দুটি আলাদা পরিবারের। আম Anacardiaceae ও আর লিচু Sepindaceae পরিবারের ফল গাছ। একই পরিবারভুক্ত উদ্ভিদের ক্ষেত্রে গ্রাফটিং সম্ভব। আবার লিচুগাছে আম ধরার ঘটনাটিও বিজ্ঞানসম্মত নয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু হোসেন বলেন, লিচুগাছে আম ধরার কথাটি শুনে দুই কর্মকর্তাকে তা পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, লিচুগাছে কীভাবে আম ধরল, তা এ মুহূর্তে বোঝা মুশকিল। বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন