সিন্ডিকেটের দখলে নিত্যপণ্যের বাজার!

  25-10-2016 04:22PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : বাজার অস্থির। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার হু হু করে বাড়ছে। সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষের পকেট সাবাড় করলেও দায়িত্বশীলদের টনক নড়ছে না।বাজারে গিয়ে মানুষ ভীড়মি খেলেও কারোই যেন মাথাব্যথা নেই।

মোটা-সরু- সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। বেড়েছে আট থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। গুদামে, বাজারে, আড়তে, খাটালে কোথাও ঘাটতি নেই, নেই কমতি। অথচ দাম বাড়ানো হচ্ছে ইচ্ছেমতো। ১০ টাকা কেজি দরে বিতরণের পর থেকেই এই মানবসৃষ্ট দুর্যোগ নেবে আসে।

যে কারণে বাজারে চালের দাম কমার কথা, সে কারণে বাড়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। অথচ সেটাই বাস্তব রূপ পাচ্ছে সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে। বাজার তদারকির অভাবে একটি মহল সব সময় এমনটা করে আসছে।

চিনির বাজারও বেশ চড়া। ৮০ টাকা কেজি অবাধে বিক্রি হচ্ছে। আর লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকায়। দায়িত্বশীল পর্যায়ে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি না থাকায় সিন্ডিকেট আখেরি কামাই করছে বলে যত্রতত্র ক্ষুব্ধ মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।

লবণ চাষিরা পায় মাত্র সর্বোচ্চ ১০ টাকা। ১০ টাকার সেই লবণ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকায়! এটাকে এক রকমের ডাকাতি বলছেন খাদকরা। ১০ টাকার লবণে নামকাওয়াস্তে হয়তো সিকি পয়সার আয়োডিন মিশানো হয়, আর নেয়া হচ্ছে ৪২ টাকা! মগের মুল্লুক কাকে বলে!

বাজারে নতুন শাকসবজির কমতি নেই, অথচ দাম আকাশ-ছোঁয়া। প্রশ্ন থাকে, এই আকাশ-ছোঁয়া দামের কতটা পান কৃষক, যিনি উৎপাদন করেছেন। হাড়ভাঙা খাটুনির পর তার চালানটা হয়তো উঠেনি, অথচ মধ্যসত্তভোগীদের পায়ো বারো।

বাজার তদারকি ও জবাবদিহি না থাকায়, যে যেভাবে পারছে মানুষ ঠকানোর কাজটা আচ্ছামতো করে যাচ্ছে। সামাজিক ন্যায়বিচারের অভাবে অসাধুরা মওকা পেয়ে বসেছে। শক্ত হাতে হ্যান্ডেল করার মতো দেশপ্রেমিক জায়গামতো না থাকায় এসব নৈরাজ্য চলছে বলে মনে করা হচ্ছে।

চিহ্নিত একটা শ্রেণী বৈধ-অবৈধভাবে টাকার পাহাড় গড়ছে। এই সংখ্যা অতি সামান্য মাত্র। সমাজের বাকি বড় অংশটা ডুবন্ত তরীর যাত্রী। প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ে যে তরী ডুবার উপক্রম। এটাই বাস্তবতা। কজন সুযোগ সন্ধানীর অবৈধ অর্থবিত্তের কাছে অন্যরা একেবারেই গৌণ।

সবাইকে এক কাতারে ভাবা ঠিক নয়। উঁচু-নিচুর সামাজিক বৈষম্য সেই আদিকাল থেকে। সমাজে হাতে গোনা কজন অর্থবিত্তশালী। বিত্তশানদের হিসাব আর নিম্ন আয়ের মানুষের হিসাব তো এক নয়। সেটা মসজিদে হয়তো সমান। যাদের প্রচুর আছে, তাদের বাজারমূল্য বৃদ্ধিতে সমস্যা হয় না।

বাজারকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা জরুরি। চাল-ডাল-লবণ-তেল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। এসব পণ্যের দাম ইদানীং আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। কারা কেন বাড়িয়েছে, এটার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।অভিজ্ঞদের মতে, কারণ একটাই আর সেটা হলো সুষ্ঠু তদারকি ও মনিটরিংয়ের অভাব।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন