রমজান আসতেই বাড়ল নিত্যপণ্যের দাম, যেসব এলাকায় টিসিবির পণ্য

  27-05-2017 08:12PM

পিএনএস ডেস্ক : পবিত্র রমজান শুরু হচ্ছে কাল রোববার। আজ শনিবার বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। ক্রেতারা বলছেন, রোজার কারণে অনেক বিক্রেতা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। এ কারণে তাঁরাও বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

আজ সকালে রাজধানীর হাতিরপুল বাজার, কাঁঠালবাগান বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়, চিনি ৭০ থেকে ৭৫, মসুরের ডাল দেশি ৮০, ভারত থেকে আমদানি করা ডাল ১১০, তেল প্রতি লিটার ১০২ থেকে ১০৪, খেজুর ১২০ থেকে ৮০০ ও পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এক সপ্তাহ আগে ওই তিনটি বাজারে এই ছোলা ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, চিনি ৬০ থেকে ৬৫, মসুরের ডাল দেশি ৭০ থেকে ৭৫ ও পেঁয়াজ ২৫-২৬ টাকা।

ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে কেন, জানতে চাইলে হাতিরপুল বাজারের আতিক স্টারের বিক্রেতা মো. আরমান হোসেন বলেন, রোজা আসার আগে আগেই এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে বেশি দামে তাঁদের কিনতে হয় বলে বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে। এতে তাঁদের কোনো হাত নেই।

একই দোকান থেকে নানা ধরনের পণ্য কিনছিলেন ব্যাংকার রেজওয়ানুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহেও বাজার করলাম, এত দাম ছিল না। রোজা শুরুর আগের দিন বাজারে এসে দেখি দাম প্রচুর বেড়েছে। বেশি বেড়েছে ছোলা, চিনি ও তরিতরকারির।’ বিভিন্ন উৎসবের আগে বেশি দামে পণ্য বিক্রির নজির বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১৫ মে থেকে বাজারদরের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

দেশের বিভাগীয় জেলা শহরে ১৮৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাক, ২ হাজার ৮১১ জন পরিবেশক ও ১০টি খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে এ পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে বলে ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। এসব জায়গায় ক্রেতারা কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা দরে দেশি চিনি, ৮০ টাকা কেজি দরে মাঝারি দানার মসুর ডাল, ৮৫ টাকা লিটার দরে সয়াবিন তেল, ৭০ টাকা কেজি দরে ছোলা ও ১২০ টাকা কেজি দরে খেজুর কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

আজ সকালে হাতিরপুল বাজারে নিত্যপণ্যের দাম তদারক করতে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, রমজানে যাতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য সিটি করপোরেশন নিয়মিত তদারক করবে।

কারওয়ান বাজারে কথা হয় মগবাজারের বাসিন্দা তাহমিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি ইফতারের জন্য ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্য কিনছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর এক আত্মীয় কয়েক দিন আগে কারওয়ান বাজারে টিসিবির স্টল থেকে কয়েক ধরনের পণ্য কিনেছেন। কিন্তু হাতের নাগালে না থাকায় বাধ্য হয়ে বাজার থেকে কিনছেন তিনি। টিসিবির পণ্য বিক্রির স্থান বাড়ালে তাঁর মতো আরও অনেকে উপকৃত হতেন বলে জানান।

বিক্রির স্থান বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, টিসিবির পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। গত বছর ২৮ স্থানে বিক্রি হয়েছিল। এবার হচ্ছে ৩৫টি স্থানে। এ ছাড়া গত বুধবার থেকে প্রতি ট্রাকে ২০০ কেজি করে বেশি ছোলা সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে।

যেসব এলাকায় টিসিবির পণ্য: ঢাকায় সচিবালয় গেট, প্রেসক্লাব, কাপ্তানবাজার, ছাপরা মসজিদ, পলাশী মোড়, সায়েন্স ল্যাব মোড়, নিউমার্কেট, শ্যামলী-কল্যাণপুর, জিগাতলা মোড়, খামারবাড়ি-ফার্মগেট, কলমীলতা বাজার, মহাখালী, শেওড়াপাড়া, কচুক্ষেত, মিরপুর-১০ ও মিরপুর-১ নম্বর, আনসার ক্যাম্প-পাইকপাড়া, আগারগাঁও-তালতলা, শান্তিনগর বাজার, মালিবাগ বাজার, বাসাবো বাজার, বনশ্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর, মহাখালী কাঁচাবাজার, দৈনিক বাংলা মোড়, শাহজাহানপুর বাজার, রামপুরা বাজার, আশকোনা হাজি ক্যাম্প, উত্তরার রাজলক্ষ্মী, মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার, দিলকুশা, মাদারটেক নন্দীপাড়া, কালশী মোড়সহ ৩৫টি এলাকায় টিসিবির পণ্য পাওয়া যাবে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন