বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিফলন নেই বাজারে!

  29-05-2017 03:46PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : বাজারে কোনো পণ্যের বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই। অথচ দাম আকাশচুম্বি। রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার লাগামহীন ঘোড়ার মতো ছুটছেই।সুষ্ঠু তদারকির অভাবে বাজার জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতায় বাইরে চলে যাচ্ছে। এসব যাদের দেখার দায়িত্ব, তাদের ঘুম ভাঙছে না।

‘বাণিজ্যমন্ত্রী যতই বলছেন বাজারে কোনো কিছুর ঘাটতি নেই, রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে না’; ততই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। বাজারে কোনো কিছুর ঘাটতি নেই, বাণিজ্যমন্ত্রীর এই কথাটুকু সত্য। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীরা রেকর্ড সৃষ্টি করলেও বাণিজ্যমন্ত্রী রহস্যজনক নীরব।

রমজানের প্রথম দিনেই বাজারে চাল, ডাল, মাছ, গোশত, পেঁয়াজ, শাকসবজিসহ সব পণ্যের দামবৃদ্ধি পেয়েছে। রোজাকে কেন্দ্র করেই অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে দাম বাড়িয়ে রোজাদারদের একরকম জিম্মি করে পণ্যমূল্য আদায় করছে। ক্রেতারা বাধ্য হয়ে তাদের হাঁকা দাম পরিশোধ করছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, কোনো ব্যবসায়ীই নিয়মের মধ্যে পণ্য বিক্রি করছেন না। দুদিন আগেও যে কাঁচা মরিচ ৪০ টাকায় বিক্রি হতো, সে মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ৪০ টাকা কেজির বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ঠিক থাকলেও খুচরা বাজারে ৪০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। আদা-রসুনের দামও বাড়তি নিচ্ছেন দোকানিরা। সয়াবিন তেল মিলছে না ১০০ টাকার নিচে। মাছের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। ২৪০ টাকার রুই মাছ এখন ৩৫০ টাকার নিচে মিলছে না।

চালের বাজারে আগুন লেগেছে যেন। ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে কেজিতে। গুদামে চালের কমতি না থাকলেও আযব গল্প শোনান দোকানিরা। গরুর গোশত ৪৭৫ টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলেও তা ৫৩০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ থাকায় ক্রেতারা অসহায়।

শাকসবজির দাম খুব চড়া। কদিন আগেও যে করলা বিক্রি হতো ৩০ টাকায়, সেটির কেজি এখন ৬০ টাকা। বরবটি, পটল, ঢেঁড়স, জিঙ্গা, কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। ২০ টাকার নিচে কোনো শাক মিলছে না। ইফতারি সামগ্রীর দাম সবচেয়ে বেশি।

আম ছাড়া অন্য সব ফলের মূল্য চড়া। ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজির মধ্যে আম মিলছে। কাঁচা আম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তরমুজ, আনার, মালটা, লিচু, আনারস, করমচা, পেয়ারা, কাঁঠাল, বাঙ্গির দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। এসব ফলে ফরমালিনের আশঙ্কায় ক্রেতারা ভীত।

পৃথিবীর অনেক অমুসলিম দেশেও রমজানে পণ্যমূল্য কম নেয়া হয়। সৌদি আরবে ইফতার সামগ্রী নিয়ে রোজাদারদের খোঁজে ব্যস্ত থাকেন অসংখ্য মানুষ। রোজাদারদের জন্য পণ্যমূল্য কমিয়ে রাখেন ব্যবসায়ীরা।

আমাদের দেশে এর সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে যা কাম্য নয়। অসৎ ব্যবসায়ীরা রোজার মাসের জন্য যেন অপেক্ষায় থাকে। আমাদের দেশে এসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিষদাঁত যারা ভেঙে দেবে, তারা আর কত জেগে জেগে ঘুমাবেন!

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন