বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির মুনাফা

  03-08-2017 09:07AM



পিএনএস ডেস্ক: চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে তালিকাভুক্ত নয় বহুজাতিক কোম্পানিসহ মোট ৯৪ ব্যাংক, ব্যাংকবহিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ বীমা কোম্পানি সর্বমোট ৫ হাজার ৬৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৫৯২ কোটি ৬১ লাখ টাকা বা ১১ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। কয়েকদিনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোম্পানিগুলোর ৩০ জুন সমাপ্ত অর্ধবার্ষিক মুনাফার সংক্ষিপ্ত হিসাব প্রকাশ করেছে। ওই হিসাব পর্যালোচনায় এ তথ্য মিলেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, সর্বশেষ গত এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে এসব কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৩ হাজার ৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা পৌনে চার শতাংশ বেশি। অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফার প্রবৃদ্ধি কম।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, অর্ধবার্ষিক হিসাব অনুযায়ী ৯৪ কোম্পানির মধ্যে ৮৮টি মুনাফায় ছিল। বাকি ছয়টি লোকসান করেছে। মুনাফায় থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬১টির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ও মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। বাকি ২৯টির মুনাফা কমেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস ও মুনাফা বেড়েছে ৪৭টির।

অর্ধবার্ষিক হিসাবে লোকসানি ছয়টি কোম্পানিই ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের। এগুলো হলো_ ফারইস্ট ফাইন্যান্স, প্রাইম ফিন্যান্স, বিআইএফসি, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং ফার্স্ট ফাইন্যান্স। এগুলোর সর্বমোট লোকসানের পরিমাণ ১৮৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ফারইস্ট ফাইন্যান্সেরই লোকসান ৭২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বাকিগুলোর লোকসান যথাক্রমে ৩৯ কোটি ৫৭ লাখ, ৩৪ কোটি ৭৩ লাখ, ২০ কোটি ৯৭ লাখ, ১৩ কোটি ৭৭ লাখ ও ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

অন্যদিকে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে নয়টি কোম্পানি লোকসানে ছিল। উপরের ছয় কোম্পানির মধ্যে ফার্স্ট ফাইন্যান্স ছাড়া বাকি পাঁচটি এবং লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, বিডি ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স ও গ্গ্নোবাল ইন্স্যুরেন্স লোকসান করেছে। এই নয় কোম্পানি গত এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে মোট লোকসান করেছে ১০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে সর্বাধিক ২৮ কোটি টাকা লোকসান করেছে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।

টাকার অঙ্কে বছরের প্রথম ছয় মাসে সর্বাধিক এক হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে গ্রামীণফোন। এরপরের অবস্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ৪০৮ কোটি টাকা, ইসলামী ব্যাংক ২৯০ কোটি টাকা, ব্র্যাক ব্যাংক ২২৭ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংক ১৯১ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। নিট মুনাফায় শীর্ষ দশ কোম্পানির বাকি পাঁচটির মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংক ১৭৭ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংক ১৭০ কোটি, মার্কেন্টাইল ১৫৭ কোটি, ডাচ্-বাংলা ১৪২ কোটি ও ওয়ান ব্যাংক ১৩৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করছে।

১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারপ্রতি মুনাফার (ইপিএস) হিসাবে সর্বাধিক ৬৮ টাকা ২ পয়সা মুনাফা করেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো। এরপরের অবস্থানে থাকা বাটা সু শেয়ারপ্রতি ৩৯ টাকা ২৯ পয়সা, লিনডে বিডি ২৮ টাকা ২৭ পয়সা, গল্গাক্সোস্মিথ ১৯ টাকা ২৭ পয়সা, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট ১২ টাকা ৭১ পয়সা, গ্রামীণফোন ১০ টাকা ৭২ পয়সা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ৭ টাকা ১০ পয়সা, উত্তরা ফাইন্যান্স ৫ টাকা ৫৮ পয়সা, ডিবিএইচ ৪ টাকা ৭৬ পয়সা, সিঙ্গার বাংলাদেশ ৪ টাকা ২৩ পয়সা ইপিএস অর্জন করেছে।
বছরের প্রথম ছয় মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৬১টি কোম্পানির ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এরমধ্যে স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ইপিএসের প্রবৃদ্ধি শতাংশের হিসাবে সর্বাধিক ৩৬৭ শতাংশ বেড়েছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে বীমা কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪৪ পয়সা। যা আগের বছর ছিল মাত্র ১১ পয়সা। লাইসেন্স ফিরে পাওয়ার পর ব্যবসায় ফেরায় কোম্পানিটির আয় বেড়েছে।

একই বিবেচনায় ব্যাংক এশিয়ার ইপিএসে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭৫ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের ১৭৪ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৫৭ শতাংশ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ১২৫ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ১২৩ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ১০৮ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৮৭ শতাংশ, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের ৭৬ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, ৫৯ শতাংশ, পূবালী ব্যাংক ৫৪ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫৩ শতাংশ এবং বাটা সুর ৫২ শতাংশ বেড়েছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন