স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধার তাগিদ

  24-11-2017 12:19PM


পিএনএস ডেস্ক: রফতানি ঘাটতি মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোতে স্বল্পোন্নত বা এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর উৎপাদিত সব পণ্যের দীর্ঘমেয়াদি শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

অস্ট্রিয়া সফররত শিল্পমন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের ৭ম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার এ তাগিদ দেন। ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলন উপলক্ষে উদ্বোধনী দিনে ‘বিশ্ব অংশীদারিত্ব সৃষ্টি: স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের প্রসার’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) মহাপরিচালক লি ইয়ং এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ, ল্যান্ডলক উন্নয়নশীল দেশ ও ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী অফিসের (ইউএন-ওএইচআরএলএলএস উপমহাসচিব মিজ ফেকিটমোলোয়া কাটোয়া, জাতিসংঘের ভিয়েতনাম অফিসের মহাপরিচালক ইউরি ফেডোভ, অস্ট্রিলিয়ান ফেডারেল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক পিটার লোনস্কি, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের মহাপরিচালক সুলেইমান জে আল-হার্বিশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ গৃহীত উদ্যোগ ও কৌশল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় মডেল হতে পারে। ইতোমধ্যে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ৪ দশমিক ৭ ভাগ উল্লেখ করে তিনি ইস্তাম্বুল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য শতকরা ৭ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সম্মিলিত প্রয়াস জোরদারের পরামর্শ দেন।

আমির হোসেন আমু বলেন, শিল্পখাতে উন্নয়নের পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য আন্তর্জাতিক বাজার সুবিধা সম্প্রসারণ করতে হবে। এর মাধ্যমে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২০ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর রফতানির পরিমাণ দ্বিগুণ করার লক্ষ্য থাকলেও এখন পর্যন্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলো বিশ্ব রফতানি বাণিজ্যের মাত্র শতকরা ০ দশমিক ৯৪ ভাগে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে এলডিসিভুক্ত দেশগুলো ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি ঘাটতি মোকাবেলা করেছে। এ ঘাটতি মোকাবেলায় তিনি উন্নত দেশগুলোতে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর উৎপাদিত সব পণ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদি শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি জোরদারে বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিখাতে ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলো শিল্পখাতের উন্নয়ন ও গবেষণায় যেখানে মোট জিডিপির শতকরা ২ ভাগ ব্যয় করছে, সেখানে এ খাতে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর ব্যয় মাত্র শতকরা ০ দশমিক ১ ভাগ। তিনি ইউনিডোর ‘জ্ঞান সহায়তা’ কর্মসূচির আওতায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য নতুন স্থাপিত ‘টেকনোলজি ব্যাংক’ সমৃদ্ধকরণে উন্নত দেশ, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাত, শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবদান রাখার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে বহুপক্ষীয় অংশীদারিত্ব জোরদার করা জরুরি। দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক পণ্য ও সেবা আদান-প্রদান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে শিল্পখাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার শিল্পখাতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে সরকার দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই নগরায়ন, মান অবকাঠামোর আধুনিকায়ন, পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির প্রতি অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে তিনি তুলে ধরেন।

পিএনএস/কামাল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন