১০০ ছুঁয়েছে পেঁয়াজ

  26-11-2017 09:01AM


পিএনএস ডেস্ক: ঢাকার শুক্রাবাদের বাসিন্দা আশেকুর রহমান গত শুক্রবার সকালে শুক্রাবাদ বাজার থেকে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলেন ৮৫ টাকায়। একই দোকান থেকে পরদিন গতকাল শনিবারও পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে তিনি চমকে ওঠেন দাম শুনেই।

দোকানি কেজিতে ১৫ টাকা বেশি চান। এক দিনে কিভাবে ১৫ টাকা দাম বেড়ে যেতে পারে, সেটা তাঁর হিসাবে কিছুতেই আসে না। দোকানিও তাঁকে দাম বৃদ্ধির সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। পরে দরদাম করে তিনি ৯৫ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ কেনেন।

পরে মুদি দোকানি শাওন মিয়া বলেন, ‘বেশি দামে আমাদেরই কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করছি বেশি দামে। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেশি। এর বেশি কিছু জানি না। ’

রাজধানীর কয়েকটি এলাকার মুদি দোকানিদের সঙ্গে কথা বলেও একই ধরনের উত্তর পাওয়া গেছে।

আশেকুর রহমানের মতো আরো অনেক ক্রেতা রয়েছে, যারা এ কয়দিন বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের দাম শুনে রীতিমতো ভিরমি খেয়েছে। কারণ ৫৫-৬০ টাকা থেকে হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম পৌঁছে ৮০-৮৫ টাকায়। সেখান থেকে এখন ১০০ টাকা। কোনো কোনো দোকানে অবশ্য ৯৫ টাকায়ও বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ গতকাল ৮৫-৮৮ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে, যা দিন দুয়েক আগেও ছিল ৭৬-৭৮ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৭৬-৭৮ টাকা।

এই বাজারের পাইকারি বিক্রেতা সুমন জানান, ‘ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তাই আমাদেরও বাড়ছে। কারণ আমাদের ঘাটতি থাকায় এ মুহূর্তে ভারতের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। ’

জানা গেছে, ভারতে পেঁয়াজের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় সেখানেও দাম বেড়ে গেছে। পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করেছে ভারত। গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দর কার্যকর করা হয়েছে। তবে ওই দরে পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসার আগেই দেশের ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অথচ চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তগুলোতে এখন সকাল-বিকেল পেঁয়াজের দাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। খাতুনগঞ্জ কাঁচা পণ্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবর পাওয়ার পর থেকেই এখানে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সকালের দাম বিকেলে বদলে যাচ্ছে। নতুন আমদানিমূল্যের পেঁয়াজ দেশে এলে দাম আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।

এদিকে হিলি স্থলবন্দর কাঁচামাল আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ‘আমরা ভারতের বাজারের ওপর নির্ভরশীল। তারা যেখানে ৮৫০ ডলার রপ্তানিমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেখানে আমাদের কিছুই করার নেই। দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। ’

উল্লেখ্য, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন বলে ধরে নেওয়া হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, গত বছর দেশে পেঁয়াজ উত্পাদিত হয়েছে ১৮ লাখ টন। বাকি চার লাখ টনের বেশি ঘাটতি মেটানো হয় আমদানি করে। এই ঘাটতির প্রায় পুরোটাই ভারত থেকে আমদানি করে মেটানো হয়। আভিযোগ রয়েছে, এই চার লাখ টনের কথা বলে মাঝেমধ্যে পুরো বাজার অস্থিতিশীল করে তোলে অসাধু ব্যবসায়ীরা। সূত্র: কালের কণ্ঠ

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন