দেশের ৯.৬% মানুষ বধিরতা সমস্যায় ভুগছে

  30-11-2019 12:01AM



পিএনএস ডেস্ক: দেশে প্রায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ জনগণ বধিরতার সমস্যায় ভুগছেন। তাদের মধ্যে ১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ সম্পূর্ণ বধিরতায় আক্রান্ত। ১৫ বছরের নিচে বধিরতায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ৬ শতাংশ। চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সমস্যা নিরাময়যোগ্য। তবে দ্রুত এ সমস্যা শনাক্তকরণ করা গেলে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করা ও কানে শোনার ব্যবস্থা করতে পারলে এ সকল শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসা সম্ভব।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের হামিদুর রহমান সিনহা লাউঞ্জে সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে সার্ক অঞ্চলের বধিরতা প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার।

বর্তমান বিশ্বের পাঁচ শতাংশ মানুষ বধিরতায় ভুগছেন। বিশ্বে ৪৬৬ মিলিয়ন মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত। এখনই যদি এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না যায়, তাহলে ২০৫০ সালে ৯০০ মিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ প্রতি ১০ জনে একজন বধিরতায় আক্রান্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বধিরতা নিরূপণ ও প্রতিরোধের বিষয়টি প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় নীতি ও কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। বধিরতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যশিক্ষা চালু, জনসচেতনা সৃষ্টি, জনবল তৈরি, বধিরতা অতিদ্রুত নিরূপণ কর্মকৌশলে ইত্যাদি গুরুত্ব পেয়েছে।

তারা জানান, শব্দ দূষণ, অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার, একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে কথা বলা, কানের জন্মগত ক্রুটি বধিরতার অন্যতম কারণ। ঢাকা শহরে শব্দ দূষণের মাত্রা দিগুণেরও বেশি। শব্দ দূষণের কারণে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত হয়। মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারও বধিরতার অন্যতম একটি কারণ। মেবাইলে উচ্চস্বরে গান শোনা থেকে বিরত রাখতে হবে। লাউডস্পিকারে বেশিক্ষণ গান শুনলে কানে শোনার সক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
বধিরতা প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচিও গুরুত্বপূর্ণ। হাম, মামস, রুবেলা ও মেনিনজাইটিসের টিকা প্রদানের মাধ্যমে ১৯ শতাংশ শিশুর বধিরতা প্রতিরোধ করা যায়। কানে ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণও একটি জরুরি বিষয়।

বর্তমান সময়ে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী বধিরতা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এজন্য দ্রুত শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হিয়ারিংএইড স্থাপন জরুরি বলে মনে করেন বক্তারা।

গোলটেবিলে বৈঠকে সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এস এম খোরশেদ আলম মজুমদারসহ অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক এ এইচ এম জহুরুল হক সাচ্চু, অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. এস কে নূরুল ফাত্তাহ রুমী, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. মো. আবু হানিফ, অধ্যাপক ডা. মো. আবু ইউসুফ ফকির, ডা. মোহাম্মদ ইদ্রিছ আলী, ডা. দেওয়ান মাহমুদ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া প্রফেসর ডা. ইউন ও কো, যুক্তরাজ্যের প্রফেসর ডা. গোলাম মাওলা শহিদউদ্দিন আহমেদ, ভারতের ডা. অরুন কুমার আগারওয়াল, ডা. সম্পদ চন্দ্র প্রাসাদ রাও, ডা. মিনেশ রবীন্দ্র জুবেকার, ডা. সুদীপ্ত চন্দ্র, ডা. সুব্বিয়া কান্নান, শ্রীলংকার প্রফেসর ডা. জে এম আরজি জায়াওয়েরা ও নেপালের অধ্যাপক ডা. নার মায়া থাপা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন