শিশু যৌনকর্মীরা খায় গরু মোটাতাজাকরণের ওষুধ

  01-12-2016 03:15PM

পিএনএস ডেস্ক: উচ্ছেদের শিকার যৌনকর্মীর ৬০ শতাংশের বয়স ১০ থেকে ১৬ বছর বলে এক গবেষণায় দেখা যায়। এই গবেষণা এলাকায় ১০ বছর বয়সের আগে ১০ শতাংশ শিশু যৌনকর্মে নিয়োজিত হয়। এই শিশুরা নিয়মিত গরু মোটাতাজাকরণ ওষুধ সেবন করে। ২০ বছরের ওপরে যৌনকর্মী পাওয়া যায় ২০ শতাংশ। তারা বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে আছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ২০১৬ সালে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত টাঙ্গাইল, মাদারীপুর ও খুলনা জেলার ‘যৌনকর্মীর মানবাধিকার যৌনপল্লী উচ্ছেদের মনোসামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব’শীর্ষক এই গবেষণা করে।

গত মঙ্গলবার নগরীর সিরডাপ মিলনায়তনে গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ এমপি। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের পরিচালনায় অনুুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মেডিয়েশন এন্ড রেপিট রেসপন্স ইউনিটের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর নিনা গোস্বামী। গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক এসএম আমানউল্লাহ।

গবেষণায় উপস্থাপনের সময় বলা হয় ৯০ দশকে ৭/৮ হাজার যৌনকর্মী থাকলেও এখন তা ২ লাখে পৌঁছেছে। ২০ লাখ মানুষ নিয়মিত যৌনকর্মীর সংস্পর্শে যায়। ৫০ লাখ মানুষ জীবনে একবার তাদের সংস্পর্শে যায়। একজন যৌনকর্মী প্রতিদিন ৭-১৫জন যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়। তাদের গড় আয় ২ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

উচ্ছেদের পরে তাদের ৬০ শতাংশ একা থাকে, ৩০ শতাংশ ভালোবাসার মানুষের কাছে থাকে। ৬০ শতাংশ যৌনকর্মীর জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। ধর্মীয় কারণে ৬ শতাংশ, ১২ শতাংশ স্থানীয় মানুষের জন্য এবং ৫২ শতাংশ রাজনৈতিক কারণে উচ্ছেদ ঘটে। প্রশাসন ও পুলিশ উচ্ছেদ চায় না। কারণ তারা যৌনকর্মীদের আয়ের একটি অংশ পায়। উচ্ছেদের সময় তারা নির্যাতনের শিকার হয়। উচ্ছেদ হওয়ার পর ৬০ শতাংশ আবার একই কাজে লিপ্ত হয়। গবেষণায় দেখা যায় গ্লোবাল ফান্ড কর্তৃক অর্থায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালনায় চালিত ড্রপ ইন সেন্টার (ডিআইসি) বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন রকম প্রতিরোধক গ্রহণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যৌন কর্মীরা এইচআইভি এইডসসহ নানা রকম যৌন সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক বেড়ে ৯০ শতাংশ হয়েছে। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ বেড়ে গেছে। বলা হয় সংবিধান অনুযায়ী তাদের সাথে বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই। হাইকোর্টের নির্দেশ আছে জীবন জীবিকা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না। তারপর তারা উচ্ছেদের শিকার হয়। এই অবস্থায় জিও এনজিওর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ব্রোথেল প্রেটেকশন কমিটি ও মনিটরিং কমিটি গঠন করার পরামর্শ দেন গবেষকরা।

সুত্র: ইত্তেফাক


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন