নীলফামারী মাদক দ্রব্যের অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট!

  04-12-2016 08:01PM

পিএনএস, নীলফামারী : নীলফামারী জেলা এখন মাদক দ্রব্যের অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট হয়ে পড়েছে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে গ্রেফতার করা হলেও পূণরায় হাজত খাটারা আবারও বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। ফলে হাত বাড়ালেই ফেন্সিডিল, ফেনারগান, হিরোইন সহ নানান নেশা জাতীয় দ্রব্য দেদারছে বিক্রি করছে। ফলে মানুষের জীবন যাত্রার মান চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দেশের বেশি মঙ্গা কবলিত এ জেলার মানুষ কৃষি নির্ভর ও ব্যবসা বানিজ্যে খুবই স্বচ্ছল, তাদেরই সন্তানরা মাদকাসক্ত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে ভারসার্ম্যহীন হয়ে পড়ছে।

সূত্রটি জানায়, জেলার অফিস আদালত, ব্যাংক সীমান্ত এলাকায়, স্কুল-কলেজ ছাত্রাবাসে এমনকি চরাঞ্চলে, হাটবাজারে, পাড়া-মহল্লায় এর কারবার চলে বলে প্রাপ্ত সূত্রে জানা। এসবের মধ্যে জড়িয়ে অফিস আদালত, ব্যাংকের টি,এ,বয় অফিসাররা এক শ্রেনীর স্কুল কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও তাদের দোসররা। ফলে সরকারী কর্মকর্তারা এসব জেনেও না জানার ভান করে থাকছেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে। প্রলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এসব বিষয় জেনেও কোন লাভ হচ্ছেনা বলে জানান, নাম প্রকাশ করার শর্তে অনেকেই। যদিও মাঝে মধ্যে উশৃঙ্খল দোসররা গ্রেফতার হচ্ছেন প্রকৃত সন্ত্রাসীরা ঘুষের বিনিময়ে একটি দোসর গ্রেফতার হলে আরোও বেশি করে চোরাগোপ্তা হামলা ঘরে ঘরে চালাচ্ছে।

ফলে জেলার মানুষ শুধু জীবনটুকু বাচার জন্য এসবের বিষয়ে কাউকে বলছেন না কেউ! জানতে চাইলে বলছেন কিছুই হয়নি। অন্যদিকে জেলার উগ্রপন্থি উশৃঙ্খল ছেলেদের ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা বাড়ী বাড়ী গিয়ে যা খুশি তাই করছে। জেলার অফিস, আদালত, ব্যাংক গুলোতে উন্নয়নের নামে দূর্নীতি গ্রাস করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়ায়ও রেজিস্টার ডাক্তার দিয়ে অবৈধ ক্লিনিক তৈরি করে ব্যবসা চালাচ্ছেন এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে মহিলা ডাক্তারদের সংখ্যা অনেক বেশি। সরকারী ভাবে কোন সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না এরকম অভিযোগ ভুরি ভুরি। ফলে জেলার সাধারণ মানুষরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। জেলায় ৬ টি উপজেলায় নেশা খোরদের উপদ্রব বেড়েই চলছে। কিশোর তরুনরা লেখা পড়ার নেশায় আসক্ত না হয়ে মাদকের নেশায় আসক্ত হচ্ছে। হাজার হাজার কিশোর তরুণ ছাত্র/ছাত্রী প্রকৃত শিক্ষা থেকে ঝড়িয়ে পড়ছে।

ফলশ্রুতিতে স্বাভাবিক জীবন যাত্রার মান চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির যন্ত্রের অপব্যবহারের কারণে মহিলারা রান্না করতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন, এবং মহিলারা বাড়ী থেকে বের হলে উশৃঙ্খল ছেলেদের হাতে পড়তে হয়। এতে স্বামী/স্ত্রী ছেলে-মেয়েদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের পরিবারে সব সময় গোলমাল লেগে আছে। ফলে এই জেলার মানুষরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবেই আতঙ্কে আছে। এতে তাদের কাক্ষিত স্বপ্ন স্থগিত হয়ে পড়েছে।

মঙ্গাকবলীত নীলফামারী জেলার মানুষ গুলো যখন বিভিন্ন ইনজিও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদের ছেলে মেয়েদের লেখা-পড়া করে উন্নত জীবন গড়ে তুলতে ধরছেন, ঠিক তখনেই জেলার মানুষ এই সব অভিশপ্তের বেড়া জালে স্বমনে লুঠিয়ে পড়ছে। অন্ধাকার হয়ে যাচ্ছে তাদের ভবিষৎ এর পাতা। জেলার মানুষ তাদের ব্যবসা বানিজ্য ছোটো-খাটো শিল্প, কল-কারখানা কৃষি কাজ করতে না পারেন, তাহলে এ জেলার মানুষ তাদের ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন না। এতে মঙ্গাকবলীত মানুষ ভয়ানক মঙ্গার কবলে পড়বেন।

এ চিন্তায় সাধারণ মানুষ বিভিন্ন রোগ বালাই নিয়ে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। তাদের এই অভিশপ্ত! জীবন থেকে কবে মুক্তি পাবে ? এখন তাদের অন্ধাকার পথ কবে ? প্রকৃত আলোয় সুশয্যিত হবে, কবে ? স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে তারা ? যা মানবিক বিপর্যয়ের ফলপ্রসূ।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন