কচুয়ায় নাকি মাদকের হাট বসে!

  17-01-2017 09:37PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : মাদকে আসক্ত যুবসমাজ। মাদক ছড়িয়ে আছে চারদিকে। হাত বাড়ালেই নাকি মিলছে যত্রতত্র। মাদকের ভয়াবহতা উঠতি বয়সের যুবকদের গ্রাস করছে।যুব সমাজের বড় একটা অংশ নেশাগ্রস্ত হওয়ায় জাতির ভবিষ্যৎনিয়ে শঙ্কা জাগছে।


হাট-বাজার, মাঠ-ঘাট, নদ-নদী, সীমান্ত, স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি, যানবাহন এমনকি মুক্ত নয় জেলখানাও! মাদকের ছড়াছড়ি সর্বত্র। সর্বনাশা এই মাদক প্রায় সর্বত্র তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। সমাজের বড় একটা অংশ কোনো না কোনোভাবে এর সঙ্গে যুক্ত।

একশ্রেণীর জনপ্রতিনিধি এখন এর সঙ্গে যুক্ত। কক্সবাজারের একজনের নাম তো সবাই জানে। আমার জন্মস্থান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় নাকি রীতিমতো মাদকের হাট বসে। আর সেটা হচ্ছে সরাসরি জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে। কচুয়ার ৯৫ শতাংশ জনপ্রতিনিধি এখন এ করছেন। জেলা পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে পূর্ব পরিচিতির সুবাধে কচুয়ায় জনৈক জনপ্রতিনিধি এটা করার নাকি অবাধ লাইসেন্স পেযেছেন।


কয়েক বছর আগে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে মাদকসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকে গ্রেফতার হয়েছে মাদকসহ। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বনাশা এই মাদকের ব্যবসা করে ছাত্র নেতারা। তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলাও হয়েছে।


আমরা জানি মাদকাসক্ত সন্তান বাবাকে হত্যা করেছে, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ ভূরি ভুরি। মাদকাসক্ত বাবা সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার অপ-নজিরও আছে। আবার মাদকের টাকার জন্য বখাটে মাদকাসক্ত সন্তান কর্তৃক বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগও কম নয়।


সহজ প্রাপ্তি ও সঙ্গদোষে অনেকে এই পথে আসছে। স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও এই নেশায় আক্রান্ত হচ্ছে। খারাপ বন্ধুদের সঙ্গে মেশার কারণে তারা সহজেই নেশার কবলে পড়ছে। বাবা-মাসহ অভিভাবককে নজরদারি জোরদার করতে হবে, তার সন্তান কাদের সঙ্গে মিশছে।


সন্তানকে সন্ধ্যার আগে বাসায় ফেরার ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেষ্ট থাকতে হবে। কখনো দেরি হলে সে জন্য সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মা-বাবাকে তাদের সময় দিতে হবে। তাদের যৌক্তিক চাওয়ার ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। আবার অতিরিক্ত হাত খরচ থেকে সাবধান থাকতে হবে।


মা-বাবাকে পারিবারিক সমস্যা নিয়ে ঝগড়া সন্তানদের সামনে যত কম করা যায় ততই মঙ্গল। গবেষণায় দেখা গেছে, বাবা-মায়ের অমিল ও অনাসৃষ্টি সন্তানদের বখাটে হতে বাধ্য করে।অভ্যন্তরীণ সমস্যা বাচ্চাদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত।


বাবা-মাকে বাচ্চাদের কমপক্ষে সপ্তাহ, পক্ষকাল না হলে মাসে অথবা দু মাসে একবার হলেও একসঙ্গে বাইরে কোথাও ঘুরে আসা ভালো। যারা দুই মাসেও এটা না পারেন, তারা তিন মাসে হলেও সুস্থ্য বিনোদন কেন্দ্রে অথবা পর্যটন কেন্দ্রে না হয় জাদুঘরে বা এ জাতীয় জায়গায় ভ্রমণ করলে বাচ্চাদের মন ভালো থাকে।


শিশুদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করলেও সহজে মাদকমুক্ত রাখা যায়। আর মাদক যদি হাতের কাছে না পাওয়া যায়, তাহলে যুব সমাজও এতে আক্রান্ত হবে না। তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ জন্য প্রতিকারমূলক কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। এককথায় সহজ প্রাপ্তি বন্ধ করা গেলে মাদকমুক্ত সমাজ গড়া সহজেই সম্ভব।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন