শিক্ষক ও ব্যাবসায়ীর হাত পা ভেঙ্গে দিলেন চেয়ারম্যান

  28-03-2017 04:21PM

পিএনএস, ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান ও তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে ঝালকাঠির এক প্রধান শিক্ষকের হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই নারী সহ আরো তিন জন। এদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন দাবী করেছেন, তাকে হত্যার জন্য এরা পরিকল্পনা করছিল।

আর তা জানতে পেরে এলাকাবাসী দুজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। আহতরা হচ্ছেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নের গোবিন্দ ধবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ মিয়া, কীর্তিপাশা বাজারের ব্যবসায়ী উত্তম দাস, তার বোন রীনা দাস এবং ভাইয়ের বউ আঞ্জনা দাস। মঙ্গলবার রাতে চেয়ারম্যানের নিজ ইউনিয়ন সদর উপজেলার কীর্তিপাশা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক এসএম হাসান মাহামুদ জানান, শিক্ষক আব্দুল লতিফের হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত লেগেছে। অপরদিকে ব্যবসায়ী উত্তম দাসেরও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।

আহত শিক্ষক প্রধান শিক্ষক লতিফ মিয়া জানান, রাত সাড়ে ন’টার দিকে শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান আমাকে ধরে তার গাড়িতে করে কীর্তিপাশা বাজার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ী উত্তম দাসের দোকানে সামানে গাড়ি থামিয়ে আমাকে ও উত্তমকে হকিইস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে প্রভাব খাটোতে না পেরে আমাদের ওপর এ হামলা চালানো হয়, বলেন প্রধান শিক্ষক লতিফ মিয়া জানান। ব্যবসায়ী উত্তম দাস বলেন, আমাকে মারধরের এক পর্যায় আমার বোন রীনা দাস এবং ভাইয়ের বউ আঞ্জনা দাস এগিয়ে আসলে তাদের সুলতান হোসেন খানের লোকজন তাদেরও পিটিয়ে আহত করে। পরে আমাকে ও শিক্ষক আব্দুল লতিফকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে আসেন ।

এ ব্যপারে ঝালকাঠি সদর থানার পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) মো. মাহে আলম বলেন, চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন, ওই শিক্ষক এবং উত্তম দাস সহ এলাকার একটি মহল চেয়ারম্যানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিষয়টি জানাতে পেরে এলাকার লোকজন লতিফ ও উত্তম দাসকে আটক করে থানায় আনে। এ সংক্রান্ত কিছু মোবাইল ফোনের কথোপকথন চেয়ারম্যান পুলিশকে দিয়েছে। তাই এ ব্যপারে চেয়ারম্যানের পক্ষে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও রেকর্ড করা হয়েছে।

তবে শিক্ষক ও ব্যবসায়ী উত্তম দাসের অভিযোগটিও খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, বলেন ওসি মাহে আলম। এদিকে এ ঘটনায় ঝালকাঠি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান বলেন, আব্দুল লতিফ বহু মামলার আসামী। সে শিক্ষাকতাকে পুজি করে এলাকায় নানা অপকর্ম করে আসছিল। আমি আমার ইউনিয়নে মাদকসহ সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নানা কর্মসূচি চালিয়ে আসছি।

এতে নাখোশ হয়ে আমাকে হত্যার জন্য লতিফ মাষ্টারসহ একটি গ্রুপ পরিকল্পনা করে। আর এর পরিকল্পনার ফোন রেকর্ডও থানা পুলিশের কাছে দেয়া হয়েছে। আর এ বিয়ষটি জানতে পেরে মঙ্গলবার রাতে এলাকার লোকজন লতিফ ও উত্তমকে গণধোলাই দিয়ে থানায় সোপর্দ করে। তিনি আরও বলেন, একজন উপজেলার চেয়ারম্যানের একটি স্কুলের কমিটিতে প্রভার খাটানোর কোন প্রশ্নই ওঠেনা। গণধোলাই খেয়ে আমার বিরুদ্ধে এ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, বলেন ঝালকাঠি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন