স্কুলছাত্রীর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে, ৪ দিনেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

পিএনএস ডেস্ক : শ্রীনগরে স্কুলছাত্রীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে এক লন্ডন প্রবাসী। বিভিন্ন মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারে এগুলো ছড়িয়ে পড়ায় শ্রীনগর হাঁসাড়া কালীকিশোর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই ছাত্রী দুবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বুধবার রাতে শ্রীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত ওই এলাকা পরিদর্শনে যায়নি এবং কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং থানায় অভিযোগ করার কারণে লন্ডন প্রবাসী রুবেল মাঝির (৩০) বাবা পশ্চিম হাঁসাড়া গ্রামের আওলাদ মাঝি তার লোকজন নিয়ে মেয়ের বাবাকে অভিযোগ উঠিয়ে নিতে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন, রুবেলের দুই ভাই রিফাত ও রায়হান তাদের বন্ধুবন্ধব নিয়ে তাকে নানাভাবে হয়রানি করছে।

ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ওই ছাত্রী সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় রুবেল মাঝি ফুসলিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রায় চার বছর আগে রুবেল লন্ডনে চলে যায়। এরপর আকলিমা নামে রুবেলের এক আত্মীয়কে দিয়ে ওই ছাত্রীর কাছে একটি আধুনিক মোবাইল ফোন পাঠায়। মোবাইল ফোনে রুবেলের সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রায় সময়ই ভিডিওকলে কথা হতো। কথা বলার বিভিন্ন সময়ে রুবেল কথার মারপ্যাঁচে ওই ছাত্রীকে দুর্বল করে কিছু নগ্ন ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তাদের সম্পর্কের কথা রুবেলের পরিবার জেনে যায়। প্রথমে বাধা সৃষ্টি করলেও পরে তারা দরিদ্র পরিবারের ওই ছাত্রীকে ছেলের বউ করে নিতে রাজি হয়।

কিন্তু কিছু দিন আগে রুবেলের পরিবার কোনো কারণ ছাড়াই বেঁকে বসে এবং ছেলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। রুবেল প্রথমে নীরব থাকলেও পরে ওই ছাত্রীকে জানিয়ে দেয় পরিবারের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। এ নিয়ে রুবেলের সঙ্গে ওই ছাত্রীর কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রুবেল ওই ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও নেটে ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি ওই এলাকায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় ওই ছাত্রী দুবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

কয়েকদিন আগে বিষয়টি শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানতে পারেন এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শ্রীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এরপরই ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানায়, রুবেল ছোটবেলা থেকেই বখাটে। হাঁসাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ার সময় অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়। পরে সে বেজগাঁও এলাকার এক আত্মীয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সর্বস্ব লুটে সটকে পরে। পরে রুবেলের টার্গেটে পড়ে ওই স্কুল ছাত্রী।

এ বিষয়ে হাঁসাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সোলায়মান খান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শ কাতর। এর উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আলমগীর হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত লন্ডনে থাকায় আইনি জটিলতা রয়েছে।

পিএনএস/জে এ /মোহন