পিএনএস ডেস্ক: ময়মনসিংহ শহরে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে মাইক্রোবাসে তুলে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রায় চার মাস পর ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর বাবা কোতোয়ালী মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ পরিবারের।
মামলার প্রধান আসামি ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর কবির।
ভুক্তভুগী ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, আসামিরা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে তাদেরকে। এখন তার বিবাহিত বড় মেয়েকেও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় পরিবারটি। এদিকে ধর্ষণের পর থেকে ওই কলেজ ছাত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শহরের ২নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক আহমেদ জানান, মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ওই মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী ময়মনসিংহ শহরে তার বোনের বাসা থেকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে ভালুকা উপজেলার সিডস্টোর বাজার হবিরবাড়ির মাইন উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে আলমগীর কবির (২৪), মোর্শেদের ছেলে তুষার (২৬) ও মোখলেছ (২৫) অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুই/তিনজন অপহরণ করে সাদা রংয়ের কালো গ্লাস সংযুক্ত মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। আসামিরা অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গিয়ে খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে যেখান থেকে অপহরণ করেছিল সেইস্থানে অচেতন অবস্থায় ফেলে চলে যায়। জ্ঞান ফিরলে বান্ধবীদের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।
মামলার প্রধান আসামি আলমগীর কবির এর আগেও একদিন ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী জানান, ঘটনার পর থেকে দীর্ঘদিন তার মেয়ে অসুস্থ ছিল।এরপর লোকলজ্জার ভয়, ধর্ষণকারীদের হুমকি ও সামাজিকভাবে সমাধানে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে চার মাস পর মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আসামিরা রাজনৈতিক ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিব জানান, আলমগীরের বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। অচিরেই ইউনিয়ন কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে।
সাধারণ সম্পাদক সরকার মো. সব্যসাচী জানান, অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে খোঁজ খবর নিতে বলা হয়েছে।
পিএনএস/আলআমীন
প্রকাশ্যে ঘুরছে ধর্ষণ মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা
24-05-2017 09:23AM