জেলখানায় সাফাত-নাঈমের মারামারি

  26-05-2017 12:40PM

পিএনএস ডেস্ক:বনানী রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের মামলার প্রধান দুই আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ কারাগারে মারামারি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাঈম আশরাফকে কারাগারে নিয়ে আসা হয়।

এরপর সারারাত অন্যান্য হাজতী ও কয়েদীদের সঙ্গে আমদানী তাকে সেলে কাটাতে হয়। শুক্রবার সকাল সকাল তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সব নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানানো হয়। নাম ঠিকানা, ছবি তুলে তাকে সাফাত ও সাদমানের সঙ্গে একই সেলে থাকবে কিনা সেটি জানতে চান একজন ডেপুটি জেলার।

তারপর নাঈম আশরাফকে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে শাপলা ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তাকে দেখেই ক্ষেপে যান সাফাত আহমেদ। নাঈম আশরাফের গলা চেপে ধরে ইংরেজি গালি দিয়ে (প্রকাশ অযোগ্য) চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। এসময় কারারক্ষীরা এবং সাদমান দুজনকে আলাদা করে ফেলেন। এরপরও নাঈম সেখানেই থাকবে বলে কারা কর্তৃপক্ষকে জানান। কিন্তু দুজনকেই সাবধান করে দেয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নাঈম জবানবন্দি দেয়। এ নিয়ে এ মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চার আসামিই আদালতে জবানবন্দি দিল।

মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু নাঈম আশরাফ স্বীকার করে, তারা দুজন হোটেলের দুটি কক্ষে আটকে ওই দুই তরুণীকে ধর্ষণ করে। অন্য তিন আসামি তাদের সহযোগিতা করে। পরে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য ওই দুই তরুণীকে ভয়ভীতি দেখানোর কথাও স্বীকার করে নাঈম।

মামলার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এর আগে অন্য তিন আসামি সাফাত, সাদমান ও বিল্লালের স্বীকারোক্তির সঙ্গে নাঈমের স্বীকারোক্তির মিল রয়েছে।

নাঈম আশরাফ সিরাজগঞ্জের ফেরিওয়ালা আমজাদ হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বনানীর ধর্ষণ ঘটনায় জড়িত থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে। তার আসল নাম আবদুল হালিম।

উল্লেখ্য, বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে ৬ই মে বনানী থানায় মামলা করেন নির্যাতিত এক তরুণী। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮শে মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ তার জন্মদিনের দাওয়াত দেয় এই দুই তরুণীকে। এরপর বনানীর ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মামলার বাদীকে সাফাত ও তার বান্ধবীকে নাঈম ধর্ষণ করে। এ সময় সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, র‌্যাগমান গ্রুপের মালিকের ছেলে সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও গানম্যান রহমতকে আসামি করা হয়। মামলার পর পৃথক অভিযানে সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় রহমত ছাড়া চার আসামিই ১৬৪ ধারায় অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। নাঈম আশরাফ সিরাজগঞ্জের ফেরিওয়ালা আমজাদ হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বনানীর ধর্ষণ ঘটনায় জড়িত থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে। তার প্রকৃত নাম হাসান মো. আব্দুল হালিম।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন