এবার আশুলিয়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় স্কুলছাত্রকে নির্যাতন

  11-08-2017 06:31PM

পিএনএস ডেস্ক : আশুলিয়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে সানি আলম (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রের চোখ বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুর তিনটার দিকে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এছাড়াও ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে কিবরিয়া নামের এক ছাত্রকে আটক করা হয়েছে বলে ওসি আব্দুল আওয়াল নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতনের স্বীকার ওই স্কুলছাত্রের বাবা সরোয়ার হোসেন জানান, দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে আশুলিয়া কুরগাও এলাকার হাউজিং সোসাইটি এলাকায় রেজার বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। তবে তার একার আয়ে পরিবারে সংসার চালাতে হিমশীম খেতে হয়। তাই বড় ছেলে সানি আলম তার সাথে অটোরিক্সা চালিয়ে সহযোগীতা করতো। সানি ওই এলাকার প্রফেসর পাড়া হাই স্কুলের অষ্টশ শ্রেণীতে পড়াশুনা করে।

বুধবার বিকেলে হঠাৎ করেই স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম সোহাগ ও তার লোকজন চোর সন্দেহে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পাশের রিমেক্স লিবার্টি সিটির ভেতরে নিয়ে গিয়ে চোখ বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন শুরু করে। টানা চার ঘণ্টা ওই যুবককে পোটাতে থাকে ইউপি সদস্যের লোকজন। এক পর্যায়ে তারা সানির পায়ের নখ উপড়ে দেয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই স্কুল ছাত্রকে বাড়িতেই নজরবন্ধী করে রাখা হয়। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আওয়াল ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্কুলছাত্রকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করে।

নির্যাতনের স্বীকার স্কুলছাত্রের প্রতিবেশী ফাতেমাসহ একাধিক স্থানীয়রা বলেন, সানি আলম স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি অটোরিক্সা চালিয়ে তার পরিবারকে সহযোগীতা করতেন। সে অনেক ভালো ছেলে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে এভাবে মারা হয়েছে।

নির্যাতনের স্বীকার স্কুলছাত্রের বাবা অভিযোগ করে আরো বলেন, তার ছেলে স্কুলে পড়াশুনা করেন। এরই সুবাধে পার্শ্ববতী কিবরিয়ার ভাইয়ের মেয়ের সাথে তার ছেলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়। এ কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলেকে এভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়।

এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম সোহাগের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই স্কুলছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এছাড়াও এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে কিবরিয়া নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন