সাত খুনের মামলার কৌশলীর মেয়েকে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ

  23-08-2017 09:13PM

পিএনএস ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলার সরকারি কৌশলী ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়েকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে জোর করে বিষজাতীয় কিছু একটা খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পরেই সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বিপরীতে একটি কোচিং সেন্টারের সামনে এ এ ঘটনা ঘটে। তার নাম মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তি। সে এ-লেভেল পড়ে।

ওয়াজেদ আলী খোকন সাংবাদিকদের বলেন, বাসা (হাজী মঞ্জিল) থেকে কাছেই একটি কোচিং সেন্টারে ক্লাস করতে যায় মাইশা। কোচিং শেষে চার তলা ওই কোচিং সেন্টারের শেষে নিচে নামার পর কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে বলে, সাত খুনের মামলায় তোমার বাবা তো অনেক ভালো কাজ করেছে। এ জন্য আমরা মিষ্টি খাওয়াতে এসেছি, এই নাও মিষ্টি খাও। তখন মাইশা তাদের বলে যে, চাচা আমি বাইরে কিছু খাই না। এরপরই তিনজন ব্যক্তি জোর করে বিষজাতীয় কিছু একটা তার মুখে পুরে দেয়। এরপরই তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। জোর করে খাওয়ানোর পরই মাইশা আমাকে ফোন করে এসব কথা বলে। এর কিছুক্ষণ পরই সে অসুস্থ হয় পড়লে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধি জানান, রাত সোয়া আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে। এরপর চিকিৎসকেরা তার পাকস্থলী পরিষ্কার করেছেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাত খুনের মামলার সরকারি কৌশলী ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়েকে মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ আমরা শুনেছি।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকায় র‍্যাবের সদস্যরা চেকপোস্ট বসিয়ে কাউন্সিলর নজরুলের গাড়ি থামান। র‍্যাব গাড়ি থেকে নজরুল, তাঁর তিন সহযোগী ও গাড়িচালককে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন আইনজীবী চন্দন সরকার। তিনি অপহরণের বিষয়টি দেখে ফেলায় তাঁকে ও তাঁর গাড়িচালককেও র‍্যাব তুলে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের সবাইকে হত্যা করে ওই রাতেই পেট কেটে এবং ইটের বস্তা বেঁধে সবার লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। ৩০ এপ্রিল ছয়জন ও পরদিন একজনের লাশ ভেসে ওঠে। সাতজন হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম। এর এক সপ্তাহের মধ্যে এ ঘটনায় র‍্যাব-১১-এর অধিনায়ক তারেক সাঈদসহ তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যুক্ততার তথ্য প্রকাশ পায়, টাকার বিনিময়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। একসঙ্গে সাতজনকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা ও গুমের নৃশংসতায় শিউরে ওঠে দেশের মানুষ।

এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটির বাদী নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এবং অপরটির বাদী আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। এসব মামলায় সরকারি কৌশলী ছিলেন ওয়াজেদ আলী খোকন।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন