এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগপত্র

  24-09-2017 08:54PM

পিএনএস ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে বহুজাতিক কোম্পানির কর্মী রূপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার এক মাস পূর্ণ হলো। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেবে পুলিশ।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মাহবুব আলম এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকী রোববার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা করে।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুরের অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকী বলেন, ময়নাতদন্তের সময় সংরক্ষিত রূপার দাঁত ও পরিধেয় বস্ত্র আদালতের অনুমতি নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর প্রতিবেদন আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই পাওয়া যাবে। এদিকে মামলার তদন্তও শেষ পর্যায়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ছোঁয়া পরিবহনের সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, হত্যা, গণধর্ষণের অভিযোগ আনা হচ্ছে অভিযোগপত্রে। অভিযোগপত্রে ২০ থেকে ২২ জনকে সাক্ষী করা হচ্ছে। এঁদের মধ্যে পুলিশ, চিকিৎসকসহ পাঁচ-ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা থাকছেন।

রূপাকে হত্যার পর ময়মনসিংহ-বগুড়া রুটে চলাচলকারী ছোঁয়া পরিবহনের শ্রমিকেরা স্বাভাবিক ছিলেন। ঘটনার পরদিন থেকেই তাঁরা স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রূপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে লাশের ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ হাবিবুর, সফর আলী, শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের কাছে তাঁরা রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁরা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছেন। ৩১ আগস্ট রূপার লাশ উত্তোলন করে তাঁর ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।

১২ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সাইফুর রহমান খান ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মাথায় আঘাতের কারণে রূপার মৃত্যু হয় এবং মৃত্যুর আগে রূপাকে ধর্ষণ করা হয়।

রোববার বিকেলে মুঠোফোনে রূপার ভাই হাফিজুল ইসলাম জানান, তদন্তকাজ দ্রুত হচ্ছে এ জন্য তিনি সন্তুষ্ট। একইভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন