এবার বর্বর নির্যাতনের শিকার সুরমা

  13-11-2017 03:27PM

পিএনএস ডেস্ক : ২০১৩ সালে রাজধানীর পল্লবীর একটি ডাস্টবিন থেকে অচেতন অবস্থায় আদুরিকে (১১) উদ্ধার করা হয়েছিল। আদুুরির ওপর বর্বর নির্যাতনের করেছিল গৃহকর্ত্রী। চার বছরের ব্যবধানে আদুরির শারীরিক কাঠামো পরিবর্তন হলেও নির্যাতনের ক্ষতচিহ্নগুলো এখনও রয়ে গেছে। এবার আদুরির ক্ষতচিহ্নগুলো মুছতে নাই মুছতে অন্য এক বর্বর ঘটনার প্রকাশ। ভোলার মনপুরা উপজেলায় সুরমা(৯) নামের এক গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার প্রায় সারা শরীরে গরম খুনতির ছ্যাঁকার জখম রয়েছে। তা ছাড়া আছে বেত্রাঘাতের ক্ষত। মাথায় রয়েছে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। সে এখন ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিযোগ রয়েছে, উত্তর সাকুচিয়ার এক স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী মিনারা বেগম এই নির্যাতন চালিয়েছেন। এ ঘটনায় মনপুরা থানায় স্কুলশিক্ষক সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী মিনারা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিশু সুরমার বাড়ি তজুমদ্দিন উপজেলায়।

জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তৈয়বুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভর্তির সময় মেয়েটির অবস্থা গুরুতর ছিল। তারা শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। চিকিৎসা চলছে, তবে তার অবস্থা এখনো বিপদমুক্ত হয়নি। শরীরে অনেক ক্ষত।

শিশুটির মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তাদের বাড়ি তজুমদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ কেয়ামুল্যাহ গ্রামে। তার স্বামী ফজলুল রহমান দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর প্রায় তিন বছর আগে মারা যান। স্বামীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে তিনি মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। পরে স্বামীর মৃত্যুর কয়েক মাস পর আনোয়ারা আবার বিয়ে করেন। তিনি আরও বলেন, তাঁদের প্রতিবেশী দিলাওয়ার হোসেন তার মেয়ে মিনারার বাড়িতে কাজের জন্য সুরমাকে নেন। কথা ছিল, সুরমাকে তারা প্রতি মাসে ৮০০ টাকা বেতন দেবেন। তা ছাড়া খাওয়াবেন ও পড়াশোনা করাবেন, জামাকাপড় দেবেন।

সুরমা বলে, গৃহকর্ত্রী তাকে কারণে অকারণে মারতেন। সে কাঁদলে আরও বেশি করে মারধর করা হতো। খুন্তির ছ্যাঁকা দিতেন। চিৎকার করে কাঁদতে চাইলে মুখ চেপে ধরতেন। কোনো ওষুধপত্র দেওয়া হতো না। খাবারও কষ্ট দেওয়া হতো। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ হলে গৃহকর্ত্রী মিনারার বাবা-ভাই গোপনে তাকে তজুমদ্দিনে নিয়ে আসেন।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় সুরমাকে গত বৃহস্পতিবার উদ্ধার করেন। প্রথমে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে ওই দিনই সুরমাকে পাঠানো হয় সদর হাসপাতালে।

মনপুরা থানার ওসি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন সাইদুর মনপুরা উত্তর সাকুচিয়া ভোকেশনাল স্কুলের সহকারী শিক্ষক। গত শনিবার থেকে স্ত্রী মিনারাসহ তিনি পলাতক।

পিএনএস/জে

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন