ভয়ঙ্কর কিশোর চক্র, চতুর্থ শ্রেণির ১০ ছাত্রকে জিম্মি ও অর্থ আদায়!

  25-04-2018 02:43PM

পিএনএস ডেস্ক : পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির ১০ জনকে ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এক ছাত্রের কাছ থেকেই তিন লক্ষাধিক টাকা নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে ১০ জন অভিভাবক বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌরাঙ্গ চন্দ্র হালদারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অভিভাবকদের সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিদ্যালয়টির সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র এক শ ডলারের একটি নোট নিয়ে বাসায় যায়। ছেলের হাতে ডলার দেখে মায়ের সন্দেহ হয়। তিনি ছেলেকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন। চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্র তাকে ডলারটি দিয়েছে বলে ছেলেটি জানায়। এরপর এই ছেলের মা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রটির মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান।

জিজ্ঞাসা করলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রটি এর আগে এক শ ডলারের ৩৪টি নোট ও ৫০ হাজার টাকা সপ্তম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রকে দিয়েছে বলে তার মাকে জানায়। চতুর্থ শ্রেণির এই ছাত্রের বাবা সৌদি আরবপ্রবাসী এবং তার নানার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। তার মতো আরও ৯ জন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বাড়ি থেকে টাকা এনে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রদের দিয়েছে।

একজন অভিভাবক বলেন, চতুর্থ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রকে সপ্তম শ্রেণির ওই সাত ছাত্র শৌচাগারে নিয়ে বিবস্ত্র করে ছবি তোলে। এই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করা হতো। এ ছাড়া কয়েকজন ছাত্রকে মারধর করার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো।

পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমার ছেলে ওই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সে ঘর থেকে প্রায়ই টাকা চুরি করত। বিষয়টিতে প্রথমে গুরুত্ব দিইনি। গত সোমবার এক ছাত্রের কাছ থেকে ডলার নেওয়ার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর আমার ছেলেকে জিজ্ঞেস করি। কয়েক দিন আগে এক ছাত্রের সাইকেল ভেঙে ফেলার দোষ তার ওপর চাপিয়ে মারধরের ভয় দেখিয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র টাকা দাবি করে বলে সে জানায়।

ভয়ে আমার ছেলে বাসা থেকে টাকা নিয়ে ওই ছেলেকে দেয়। এরপর নানা অজুহাত ও ভয় দেখিয়ে প্রায়ই আমার ছেলের কাছ থেকে টাকা আদায় করত ছেলেটি। কয়েক মাস ধরে এভাবে তার কাছ থেকে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার করে টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো।’

জানতে চাইলে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র এভাবে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজনের নাম জানিয়ে সে বলে, ‘আমরা চতুর্থ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রের কাছ থেকে দুষ্টুমির ছলে টাকা নিয়েছি।’

বিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষক বিষয়টি উদ্বেগজনক দাবি করে বলেন, কিশোর বয়সের ছেলেদের এ ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়া ভয়ংকর ব্যাপার। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সন্তানদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তাঁরা।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন