ওষুধ বিক্রেতার মাথা ফাটালেন ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা

  24-09-2018 11:45AM

পিএনএস ডেস্ক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকায় এক ওষুধের দোকানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে। এতে দোকানের শুভ (৩২) নামের এক কর্মচারীর মাথা ফেটে যায়।

রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢামেকের সেবা ফার্মেসিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় শুভকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছে ঢাবি ছাত্রলীগ। তবে আজ সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বহিষ্কারের সুপারিশপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের দুই নেতা হচ্ছেন- শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও তার সহযোগী সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঝন্টু। এর মধ্যে আমির হামজার বিরুদ্ধে পলাশীতে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি, বাটা সিগনাল মোড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের মারধর, লাইব্রেরির সামনে চাপাতি হাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নূরের ওপর হামলা, মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ফেরাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ঢামেকের জরুরি বিভাগ সংলগ্ন সেবা ফার্মেসির মালিক ও আওয়ামী লীগ কর্মী মো. শহীদুর রব (পেনু)।

দোকান মালিক মো. শহীদুর রব পেনু জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা তার দোকানে ওষুধ কিনতে আসে। তার সঙ্গে ছিল সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঝন্টু। ওষুধগুলো তার দোকানে ছিল না। তখন ছাত্রলীগের ওই নেতা অন্য জায়গা থেকে ওষুধগুলো নিয়ে আসতে বলে। দোকান কর্মচারী শুভ তা আনতে অপরাগতা প্রকাশ করলে সে ক্ষেপে যান। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজা লোহার পাইপ দিয়ে কর্মচারীর মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুভকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে মাথায় আটটি সেলাই দেয়া হয়।

ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হামলা শেষে দোকানে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতারা। আর এই তালার চাবি দেয়া হয় এস এম হল ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মেহেদী হাসানের কাছে। এর আগে মেহেদীর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।

দোকানে তালা লাগানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। তারা গিয়ে দোকানের তালা খোলানোর ব্যবস্থা করেন এবং ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

তবে ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজা বলেন, ওষুধ কিনতে গেলে ওই দোকান কর্মচারী তার মাকে নিয়ে গালি দেয়। তারপর তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডার পর হাতাহাতি হয়।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমির হামজা ও দেলোয়ার হোসেন ঝন্টুকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে ঢাবি ছাত্রলীগ। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেনি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন