কন্যা সন্তান বিক্রি করে এনজিওর ঋণ পরিশোধ!

  12-10-2018 03:57PM

পিএনএস ডেস্ক : হতদরিদ্র দম্পতি মো. দ্বীন ইসলাম ও কুলছুমা বেগমের কোল আলো করে গত ৪ অক্টোবর একটি কন্যা সন্তান আসে। এই দম্পতির আরো তিন সন্তান রয়েছে। দ্বীন ইসলাম পেশায় জেলে। নুন আনতে তার পান্তা ফুরোয়। তাই বাধ্য হয়ে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সময় মতো সেই ঋন পরিশোধ করতে পারছিলেন না। তাই সদ্য জন্ম নেয়া এই কন্যা সন্তানকে বিক্রি করে এনজিওর ঋণ পরিশোধ করেছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রী কুলছুমা বেগম ও ৪ মেয়েকে নিয়ে চাঁদপুরের মাদ্রাসা রোড এলাকায় থাকেন দ্বীন ইসলাম। নবজাতক কন্যা সন্তান হাফসাকে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় বিনিময়ে এক নিঃসন্তান দম্পতি সৌদি প্রবাসীর কাছে বিক্রি করে দেন এই দম্পতি। সেই টাকা দিয়েই ওই এনজিওর ঋণ পরিশোধ করেন।

নবজাতক হাফসাকে পেয়ে বেজায় খুশি প্রবাসী মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম। তারা নতুন করে শিশুটির নাম রেখেছেন মরিয়ম আকতার ফাতিমা।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, চতুর্থবার কন্যা সন্তান হওয়ায় স্বামী দ্বীন ইসলাম খুশি ছিলেন না। তিনি স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজও করেন। একদিকে চার কন্যা সন্তান অপর দিকে ঋণের ৭০ হাজার টাকা। কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে সন্তান বিক্রি করে দেন তারা।

বিষয়টি স্বীকার করে নবজাতকের মা কুলছুমা বেগম জানান, যেহেতু সন্তান মানুষ করার সাধ্য নেই; অন্তত সন্তান বেঁচে থাকুক এমন আশা থেকেই বিক্রি করে দিয়েছি। কিছু টাকাও পেয়েছি। কী করব? এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

এ প্রসঙ্গে নবজাতক মেয়েটির নতুন মা সুফিয়া বেগম বলেন, আমার নিজের সন্তান নেই। তাই দীর্ঘদিন ধরে নবজাতক কেনার চেষ্টা করছিলাম। নিজের সন্তানের মতোই মানুষ করবেন বলে জানান তিনি।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানকে অবগত করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন