চাঁদপুরে মা ইলিশ নিধনকারীরা যারপরনাই বেপরোয়া

  18-10-2018 03:41PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধনকারীদের বড় বাড় বেড়েছে। তারা যারপরনাই বেপরোয়া। ওরা এখন আগ্নেয়াস্ত্র হাতে। তারা সরকারি নিষেজ্ঞা উপেক্ষা শুধু নয়, প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ইলিশ মাছ ধরতে মরিয়া।

জানা গেছে, চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার উত্তরে মেঘনা নদীতে ‘মা ইলিশ রক্ষা অভিযান’ চালানোর সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আক্তারসহ সঙ্গীয় ফোর্সকে আক্রমণ করে সংঘবদ্ধ জেলের দল। এতে সহকারী মৎস্য কর্মকতাসহ আরো তিনজন আহত হয়েছেন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ইউএনও।

১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় ষাটনল ছটাকি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘবদ্ধ জেলেরা এ টিমকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষায় পুলিশ ১৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে প্রাণে রক্ষা পায়। ইউএনও শারমিন আক্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, ইলিশ জাতীয় সম্পদ। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার ষাটনল ছটাকি এলাকায় অভিযান চালাই। নদীর মাঝে গেলে জেলেরা আমাদের লক্ষ্য করে পাথর, ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র ছোড়ে। রীতিমতো তারা আমাদের আক্রমণ করে। পরে পুলিশ ১৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে।

তিনি আরো বলেন, এর পরও অভিযান অব্যাহত রেখে পাঁচটি ইলিশ ধরার ট্রলার ও এক লাখ ২০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জালগুলো পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে। মোহনপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আবু তাহের বলেন, অভিযান চালানোর সময় জেলেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করলে আত্মরক্ষার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ১৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়া হয়।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অভিযানে গেলে জেলেরা আমাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে আমাদের সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মনজুরুল হকের মুখে পাথরের ঢিল পড়ে গুরুতর আহত হয়। তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা প্রমাণ করে, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ শিকারীরা কতটা সীমা ছাড়িয়ে।

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে একশ্রেণীর জেলের বাড় এতটাই বেড়েছে যে, প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার উপর গুলি চালাতে তাদের বাধে না। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে একবারও তাদের হাত কাঁপেনি। তাদের পেছনে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মূলত একশ্রেণীর নেতার আশকারা পেয়েই তারা বেপরোয়া। স্থানীয় সাংবাদিক ও অভিজ্ঞ মহলের মতে, ক্ষমতানসীনদের সহযোগিতা না পেলে নদীতে জাল ফেলার সাহস কেউ দেখাত না।

১৬ অক্টোবর যারা গুলি চালিয়েছে, তাদের খুঁজে বের বের করা কঠিন বিষয় নয়। আর ঘটনা প্রমাণ করে, ইলিশ নিধনকারীদের ভিত কতটা মজবুত ও শক্তপোক্ত। তাদের পেছনের শক্তি উৎস কী, তা বুঝতে কারো জজ-ব্যারিস্টার হওয়ার দরকার নেই। যাদের ইশারা ও মদদে জেলারা এতটা বেপরোয়া, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরি। এদের ওষুধটা ঠিকমতো পড়লে নদীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে দ্বিতীয়বার জাল ফেলার সাহস কেউ পাবে না।

লেখক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন