পিএনএস (মোঃ শাহাবুদ্দিন শিকদার) : দেশের খাল ও ছোট ছোট নদীগুলোকে হত্যা করছে বিএডিসি। ২০ মিটার প্রস্থের খালের মাঝখানে ৫/৭ মিটার খননের নামে ড্রেসিং করে সেই মাটি রাখছে খালের জায়গায়। ফলে কাজের কাজ কিছু না হলেও ২০ মিটার প্রস্থের খাল হয়ে যাচ্ছে ৫/৭ মিটার। ড্রেসিং করে দুই তীরে জমাকৃত মাটি বর্ষাকালে ধ্বসে পড়ছে খালে। ফলে খালের সবশেষ অস্তিত্বও বিলীন হচ্ছে। অপরদিকে, ২০ কিলোমিটার খালের মাঝখানে থেকে হাস্যকরভাবে এক/দুই কিলোমিটার খনন করা হচ্ছে। এতে বিএডিসির চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের পকেট ভারী হলেও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় মারাত্মক ত্রুটি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আবার অনেক জায়গায় দেশের মাঝারী মানের নদীগুলোকে খাল দেখিয়ে সেগুলোতে খননের নামে ড্রেসিং করে অর্থের শ্রাদ্ধ করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে, বগুড়ার করতোয়া নদীর নাম সকলেই জানলেও বিএডিসি এই নদীকে খাল দেখিয়ে মাত্র ১৩ কিলোমিটার জায়গা খননের অপচেষ্টা চালিয়েছে যদিও বগুড়া জেলা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে এই কিলিং মিশনকে থামিয়ে করতোয়া নদীকে আপাতত: প্রাণে বাঁচানো গেছে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, করতোয়া নদীর দৈর্ঘ্য ১২৩ কিলোমিটার। এই ১২৩ কিলোমিটার নদীর মাত্র ১৩ কিলোমিটার খননের কোন ব্যাখ্যা, বিশ্লেষন, জরিপ বা গবেষণা নেই বিএডিসির কাছে। এদিকে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পানির স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে কোন পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণের ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বিএডিসি তা মানছে না। ঘনঘন পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ করায় পানি নিস্কাশিত না হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের জমিতে ফসলের চাষ করা যাচ্ছে না। এতে করে সরকারের কৃষিনীতি ও খাদ্যনীতির পথে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্রমতে, বিএডিসির খাল খননের প্রকল্পগুলোতে বিধি মোতাবেক ড্রয়িং-ডিজাইন এবং স্পেসিফিকেশনে নেই। যথাযথ প্রাক জরিপও অনুপস্থিত। খালের কততম কিলোমিটারে বা কোন চেইনেজে কি পরিমাণ মাটি খনন করতে হবে দরপত্র্র দলিলাদিতে তারও স্পষ্ট উল্লেখ নেই। এক্ষেত্রে সিপিটিইউ কর্তৃক জারিকৃত দরপত্র বিধিমালাও লঙ্ঘিত হচ্ছে। খননের নামে চলছে লুটপাট।
অভিজ্ঞমহল এ ব্যাপারে বর্তমান কৃষিমন্ত্রীর জোর মনিটরিং ও কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
খাল ও ছোট নদী হত্যা করছে বিএডিসি ॥ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ-(পর্ব-১)
13-01-2019 03:49PM