ধর্ষণের পর শিশুর হাতে ‘সিভিট’ ধরিয়ে দেয় ধর্ষক!

  12-02-2019 05:51PM

পিএনএস ডেস্ক : কুমিল্লার হোমনায় নয় বছরের এক শিশুকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর হাতে সিভিট (ভিটামিন 'সি' ট্যাবলেট) হাতে ধরিয়ে দেয় ধর্ষক। এই ঘটনায় সুভাষ চন্দ্র দাস (৫৫) নামের ওই ওষুধ ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার উপজেলার দুলালপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই দিন রাতে হোমনা থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মঙ্গলবার মেয়েটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষককে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, মেয়েটি স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সে তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। বাবা সৌদি প্রবাসী। মা গৃহিনী।

সুভাষ এর আগেও একবার মেয়েটিকে একইভাবে ধর্ষণ করেছে বলে মেয়েটির বরাত দিয়ে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোমনা সার্কেল) সাইফুর রহমান আজাদ।

সূত্রে জানা যায়, সুভাষ দুলালপুর বাজারে ওষুধের ব্যবসার পাশাপাশি দুলালপুর সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার হিসেবে কর্মরত আছেন। সে স্থানীয় চন্ডিপুর গ্রামের মৃত রাজেন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে। তার স্ত্রী উপজেলার একটি নামকরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার দুই ছেলের একজন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরেক ছেলে কলেজে অধ্যয়নরত। শিশুটি ওই দিন দুপুরে বাজার থেকে শ্যাম্পু কিনে তার দোকানের পাশ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দোকানের ভেতরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তার হাতে ‘সিভিট’ ট্যাবলেট ধরিয়ে দিয়ে এ ঘটনা কারও কাছে না বলার জন্য শাসিয়ে দেয়।

মেয়েটির মা জানান, সোমবার দুপুরে মেয়েটিকে শ্যাম্পু কিনতে দশ টাকা দিয়ে বাজারে পাঠাই। আসতে দেরি দেখে আমি বিভিন্ন রাস্তা ও দোকানে গিয়ে মেয়ের খোঁজ করি। না পেয়ে বাড়ি চলে আসি। অনেক পরে মেয়ে শ্যাম্পু নিয়ে বাড়ি ফিরলে আমি তাকে থাপ্পড় দেই। মেয়েটি কান্নাকাটি করতে থাকে। আমি মেয়েকে গোসলের জন্য নিয়ে যাই। গোসল করানোর সময় তার বুকে দাগ দেখে- কীসের দাগ জানতে চাই।

তখন মেয়ে বলে, ‘আম্মু তুমি মাইরো না। সুভাষ মামায় ডেকে নিয়ে আমারে এই কাজ করছে।’ সন্ধ্যায় সুভাষ আমার কাছে এসে এই ঘটনা কাউকে না জানাতে অনুনয় বিনয় করতে থাকে। আমি তখন বিষয়টি চেয়ারম্যানের কাছে জানালে, তিনি আইনের মাধ্যমে যাওয়ার কথা বলে পুলিশকে জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ডাক্তার মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে দেখেছি। বুকের ডান দিকে কামড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে আরও অন্যান্য পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছি।

এ বিষয়ে দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পরে মেয়েটির মা ও তাদের আত্মীয় মেয়েটিকে সঙ্গে করে আমার কাছে এসে ঘটনা জানায়। ঘটনা শুনে সুভাষকে ডেকে আনি। সুভাষ ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য অনুনয় করতে থাকে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে সুভাষকে থানায় নিয়ে যায়।

হোমনা থানার ওসি সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী বলেন, শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতার করেছি। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন