নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিতে তানিয়া কাবু করতেন পুরুষদের

  01-06-2019 02:58PM

পিএনএস ডেস্ক :তানিয়া আক্তার তানি, ওরফে সাদিয়া আফরিন। পশ্চিমে হেলে পড়া রূপ-যৌবনকে পুঁজি করে ৩২ বছর বয়সী উচ্চাভিলাসী এই নারী নিজেকে কখনো কুমারী আবার কখনো স্বামী প্রবাসী বলে পরিচয় দিতেন। স্বল্পশিক্ষিত তানিয়া পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে চলাফেরায় ভিন্নতা আনতেও বেশ পারদর্শী। কখনো বাঙালি নারীর আটপৌড়ে শাড়িতে, কখনোবা পশ্চিমা স্টাইলের আধুনিক ড্রেসে আবার কখনো ইসলামের আদলে বোরখা ও হিজাব ব্যবহার করে নিজেকে মেলে ধরতেন। এসব ভিন্ন রূপের আড়ালেই লুকিয়ে রাখতেন প্রতারণা আর চৌর্যবৃত্তির নানা কৌশল।

উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে অভিনব কায়দায় তিনি ঢুকে পড়তেন বাসাবাড়ি আর অফিসে। ছড়িয়ে দিতেন প্রতারণা জাল, চুরি-চামারি করে একপর্যায়ে উধাও হয়ে যাওয়াটাই তার পেশা।

সম্প্রতি উত্তরা ৭নং সেক্টরে অভিযান চালিয়ে প্রতারক তানিয়া ও তার চার সহযোগীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তানিয়ার ব্যাগ থেকে প্রায় ৬ ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার এবং দেড় লাখ টাকা ও প্রতারণায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার জব্দ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার হওয়া প্রতারক চক্রের অন্যরা হলেন দুলারী ওরফে আফসানা, কামাল, আসিফ ও রায়হান।

গ্রেফতারের পরই পুলিশের তদন্তে একে এক বেরিয়ে আসতে থাকে তানিয়ার অসংখ্য প্রতারণা ও চৌর্যবৃত্তির নানা ঘটনা। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে ওইসব ঘটনা স্বীকার করে নেন ওই নারী। জানান, কীভাবে তিনি উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ফাঁদে ফেলতেন। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ঈদ সামনে রেখে তানিয়া গত এক মাসে প্রায় ১২টি বাসায় চুরি করেছেন।তানিয়া শুরুতে সেসব বাসায়ই চুরি করতেন যাদের কোনো আত্মীয়ের সাথে তার পরিচিতি থাকতো। পরে ধীরে ধীরে তার প্রতারণার জাল আরও বিস্তৃত করে দেন।

তানিয়া আরও জানান, রাজধানীর অভিজাত হোটেলের ডিজে পার্টিতে একসময় নিয়মিত যাওয়া আসা করতেন তিনি। উচ্চবিত্তদের সঙ্গে ঘণিষ্ঠতা গড়ে তোলার পায়তারায় থাকতেন। ভান করতেন প্রেমে পড়ার, নিজের সবকিছু বিলিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিতে কাবু করতেন পুরুষদের। মূলত যেভাবে হোক উচ্চবিত্ত পুরুষটির বাসায় যাওয়াটাই ছিল তার উদ্দেশ্য। টার্গেট করা পুরুষটিকে সন্তুষ্ট করার উছিলায় সুযোগ বুঝে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যেতেন।

বিভিন্ন বাসা থেকে চুরি করা মূল্যবান স্বর্ণ তানিয়া বিক্রি করতেন রাজধানীর মাসকাট প্লাজার একটি স্বর্ণের দোকানে। গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ধরা পরে চোরাই স্বর্ণের ক্রেতা ও তানিয়ার সহযোগী রায়হান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দুইটি বাসায় স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ চুরি হয়। এ সংক্রান্তে ভাটারা থানায় দুইটি পৃথক মামলা রুজু হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১৫-২০টি মামলা আছে এ নারীর বিরুদ্ধে। আর অভিযোগ আছে এছাড়া ৩০টির বেশি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন