রামপাল সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

  20-06-2019 05:26PM

পিএনএস, স্টাফ রিপোর্টার (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের রামপাল সরকারি কলেজে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে গত আড়াই বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ আড়াই বছর দায়িত্ব পালনকালে তিনি আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়ায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসন তার পরিবর্তে কলেজের জ্যেষ্ঠ একজন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নিমিত্বে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (কলেজ-৩) সহকারী পরিচালক ফারজানা আক্তারকে পত্র দিয়েছেন। দীর্ঘদিন রামপাল কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের মত দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শুন্য রয়েছে। কলেজটি সরকারিকরণ প্রক্রিয়াধীন এবং জিবির কার্যক্রম স্থগিত থাকায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বেসরকারি কলেজ-৬ শাখা ২০১৮ সালের ১৭ আগষ্টের এক নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পালকে শুধুমাত্র বেতন বিলে প্রতিস্বাক্ষর করার অনুমোতি দেন। অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের মধ্যে দ্বীনবন্ধু পাল ১ম জ্যেষ্ঠ, রেবেকা সুলতানা ২য় জ্যেষ্ঠ, সমীর কুমার ৩য় জ্যেষ্ঠ ও শেখ নজরুল ইসলাম ৪র্থ জ্যেষ্ঠতার তালিকায় রয়েছেন। অথচ ওই চার শিক্ষককে টপকিয়ে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী অধ্যক্ষের অনুপস্থিতে উপাধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করবেন এমন নিদের্শনা থাকা স্বত্তে ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে সাইদুর রহমান দায়িত্ব পালন করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বেসরকারি কলেজ-৬ শাখা ২০১৮ সালের ২৭ আগষ্টে অপর একটি নিদের্শনায় বলা হয় উপজেলার মধ্যে অবস্থিতি কলেজ সমূহের ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয় সহ অন্যান্য কার্যক্রম শুধুমাত্র অধ্যক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হবে। অথচ রামপাল কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সে ক্ষেত্রে আর্থিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করায় তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাজাহান মিয়া, উপজেলা সিহাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ শাহা আলম সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানাগেছে। এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের জমি লিজ বাবদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, বাগেরহাট জেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত ২ লক্ষ টাকা, কলেজ মসজিদ ফান্ডের ৫০ হাজার টাকা, টিউশন ফি ২ লক্ষ টাকা, ডেমনেষ্টেটর/কারিগরি শাখার পুষ্পেন বাবুর মাধ্যমে কম্পিউটার কেনার কথা বলে ৭০/৮০ হাজার টাকা ও ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে যত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে ফরম পূরণসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ প্রদান করেছে তার মানি রিসিট প্রদান না করাসহ বিভিন্ন অনিয়োমের অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইদুর রহমানের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার কলেজে গিয়ে ও তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে ও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনসহ আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে নজরদারী বাড়িয়েছি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন