দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় বিআইডব্লিউটিএ’র বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ-

  06-08-2019 03:07PM

গত ০৩/০৮/১৯ ইং তারিখে “নয়া দিগন্ত” পত্রিকায় “নৌপথে ড্রেজিং কাগজে আছে বাস্তবে নেই” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের উপর বিআইডব্লিউটিএ প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বিগত ০৩/০৮/১৯ইং তারিখে “নয়া দিগন্ত” পত্রিকায় “নৌপথে ড্রেজিং কাগজে আছে বাস্তবে নেই” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে “কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে নৌপথে ড্রেজিং খাতে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। কাগজে কলমে গুরুত্বপূর্ণ নৌরুটের ড্রেজিং কাজ করা হয়েছে দেখানো হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে ড্রেজিং না করেই কোটি কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে এই খাতে” প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্যটি সত্য নয় সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন বিআইডব্লিউটিএ সম্বন্ধে জনমনে বিভ্রান্তি ও বিরূপ ধারনা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে বিআইডব্লিউটিএ পরিবেশিত সংবাদের উপর প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ'র বক্তব্য নিম্নরুপঃ-

পত্রিকায় “ঈদকে সামনে রেখে মাওয়া-কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাঁঠালবাড়ীর প্রধান চ্যানেলের ড্রেজিং হচ্ছে ধীরগতিতে। সংস্থাটির ড্রেজিং বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের জন্য ফেরী ব্যবহারকারী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঈদে ঘরমুখো বাসযাত্রীদেরও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) ও বিআইডব্লিউটিএ এবং লঞ্চ কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, একটি মাত্র ড্রেজার দিয়ে খুব মন্থর গতিতে মাওয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরী রুটের প্রধান চ্যানেল কাঁঠালবাড়ী চ্যানেলে ড্রেজিং করা হচ্ছে। সঠিকভাবে ড্রেজিং না হওয়ায় গত বুধবার বন্ধ হয়ে গেছে চ্যানেলটি” প্রকাশিত হয়েছে যা মোটেই সত্য নয়, সত্য হলো গত ১৫-০৪-১৯ইং তারিখ হতে ৩১-০৭-১৯ইং তারিখ পর্যন্ত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরী রুটে ৬টি বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ড্রেজার নিয়োজিত করে অক্লান্ত পরিশ্রমে ড্রেজারগুলো পরিচালনা করে ড্রেজিং করার পর গত ০১-০৮-২০১৯ইং তারিখ হতে বাই-পাস চ্যানেল চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৭টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত আছে। নাব্যতা সংকটে চ্যানেল কখনও বন্ধ হয় নি। বাই পাস চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ৬৮০০ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ২০০ ফুট। বর্তমানে সর্বনিম্ন পানি রয়েছে ১২ ফুট এবং নির্বিঘ্নে ফেরী চলাচল করছে। আশা করা যাচ্ছে আসন্ন ঈদুল-আযহার সময় নাব্যতা সংকটে ঘরমুখো মানুষের কোন ভোগান্তির শিকার হতে হবে না।

পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যে, “এ রুটের বিকল্প চ্যানেলটি ব্যবহার করলে দীর্ঘ পথ ঘুরে যেতে হয়। এ ছাড়া চ্যানেলটি সরু হওয়ায় ওয়ানওয়ে চলাচল করতে হয়। আর এতে চ্যানেলের মুখে ব্যাপক যানজট শুরু হয়েছে। ফলে ফেরী পারাপারে প্রায় এক ঘন্টা সময় বেশী লাগবে। ঈদের সময় তা আরো বাড়তে পারে” এ বিষয়ে উল্লেখ্য লৌহজং চ্যানেলের স্রোত বেশী থাকায় বিআইডব্লিউটিসি’র ফেরীসমূহের স্বক্ষমতা কম থাকায় লৌহজং চ্যানেল দিয়ে ফেরীসমূহ শিমুলিয়া হতে কাঠালবাড়ী উঠতে পারছেনা, কিন্তু লঞ্চসমূহ চলাচল করছে। তবে বিকল্প নৌ-রুটে পানির স্রোত কম থাকায় প্রায় সবগুলো ফেরী চলাচল করতে পারছে। পুরোদমে ফেরী চলাচল অব্যাহত রাখতে হলে ফেরীগুলোর স্বক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এখানে উল্লেখ্য লৌহজং চ্যানেলের প্রচন্ড স্রোত থাকায় উক্ত চ্যানেলটি বর্তমানে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। লৌহজং চ্যানেল ড্রেজিং করা হলে প্রচন্ড স্রোত এবং স্রোতের সাথে প্রচুর পরিমানে পলি পরিবাহিত হয়ে চ্যানেলের মধ্যে এবং বিকল্প চ্যানেলের মুখে পতিত হবে। ফলে বিকল্প চ্যানেলের লৌহজং প্রান্তে ঘূর্ণবার্তার সৃষ্টি হবে এবং পার্শ্ববর্তী চর ভেঙ্গে তা বিকল্প চ্যানেলের মুখে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের মত বিকল্প চ্যানেলে পলি পড়ে দ্রুত ভরাট হয়ে ফেরী চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান CEGIS হতে জানানো হয়েছে যে, লৌহজং চ্যানেল এমুহুর্তে ড্রেজিং না করে বরং লৌহজং চ্যানেলের মুখে মাটি ফেলে বন্ধ করে দিতে পারলে বিকল্প চ্যানেলের স্থায়ীত্ব আরও বেশী হবে। বর্তমানে বাই-পাস চ্যানেল দিয়ে নির্বিঘ্নে ফেরী চলাচল করছে। বাই পাস চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ৬৮০০ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ২০০ ফুট। আশা করা যাচ্ছে, আসন্ন ঈদুল-আযহা এবং ১৫ আগষ্টের সময় নাব্যতা সংকটে ঘরমুখো মানুষের কোন ভোগান্তির শিকার হতে হবে না। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান CEGIS পানির স্রোত কমলে লৌহজং চ্যানেল খনন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

পত্রিকায় আরও প্রকাশ করা হয়েছে যে, “ড্রেজিংয়ের বেহাল দশার কারণে লঞ্চ রুটেরও একই অবস্থা। জানা গেছে, লাহারহাট-ভেদুরিয়া নৌপথের তেঁতুলিয়া, কালাবদর নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ৯২ হাজার ঘনমিটার ও বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে ২ লক্ষ ৯৫ ঘনমিটার, ভোলা-লক্ষীপুর ফেরীরুট ও ঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজার দিয়ে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ও বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে ২ লক্ষ ৯৬ হাজার ঘনমিটার, ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের শেওড়ানালা, মিয়ারচর এলাকার মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ ও কীর্ত্তনখোলা নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ঘনমিটার, বরিশাল-নাজিরপুর-লালমোহন নৌরুটে তেতুলিয়া ও লালমোহন নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ১লক্ষ ৩৫ হাজার ঘনমিটার, ঢাকা-পটুয়াখালী-গলাচিপা-খেপুপাড়া নৌরুটের লোহালিয়া নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ৭৮ হাজার ও বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ঘনমিটার, মিরকাদিম বন্দর থেকে তালতলা এলাকায় ইছামতি নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ৯৬ হাজার ঘনমিটার এবং বরিশাল-পাতারহাট রুটের পাতারহাট লঞ্চঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে বলে সংস্থাটির ড্রেজিং বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। ড্রেজিং বিভাগের দেয়া এ তথ্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন বরিশালের লঞ্চ মালিক স্বপন খান। তিনি বলেন, ড্রেজিংই যদি করা হয়ে থাকে তাহলে পটুয়াখালী থেকে গালাচিপা যেতে জোয়ার ভাটার ওপরে নির্ভর করতে হবে কেন” যা সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা এবং বাস্তবতা বিবর্জিত সংবাদ। এ বিষয়ে উল্লেখ্য বিআইডব্লিউটিএ হতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ড সিইজিআইএস ও আইডব্লিউএম কে নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা কোথায় কখন কি পরিমাণ ড্রেজিং করতে হবে তা প্রয়োজনীয় হাইড্রোগ্রাফি জরিপ এবং মরফোলজিক্যাল ষ্টাডি করে নদীতে এ্যালাইনমেন্ট প্রদান করেন। তারপর এ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী ড্রেজিং করা হয়। ড্রেজিং শুরুর পূর্বে বিআইডব্লিউটিএ’র হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ তাদের অভিজ্ঞ জনবলের মাধ্যমে ইকো-সাউন্ডার দ্বারা হাইটেক সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফি জরিপ করেন। জরিপ ডাটা আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকে, উক্ত ডাটা যে কেউ যে কোন সময় সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পারবে। ড্রেজিং এর পর অনুরূপ পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফি জরিপ করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ড্রেজিং পূর্ব এবং ড্রেজিং পরবর্তী হাইড্রোগ্রাফি চার্ট এবং তাদের কাছে দৈনন্দিন তথ্যের ভিত্তিতে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে ড্রেজিংকৃত মাটির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে এবং সে অনুযায়ী বিল প্রদান করা হয় এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। গত ২০১৮-১৯ইং অর্থ বছরে উল্লিখিত নৌরুট এবং নদীগুলোতে যেসকল এলাকায় নাব্যতা সংকট ছিল এবং লঞ্চ মালিক সমিতি, কার্গো ওনার্স এসোসিয়েশন, ওয়েল ট্যাংকার এসোসিয়েশন, নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন, বিআইডব্লিউটিসি ইত্যাদি যারা নৌপথ ব্যবহার করেন তাদের সুপারিশের আলোকে ড্রেজিং করা হয়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নাব্যতা সংকটে বর্ণিত নদীগুলোর কোথায়ও কোন প্রকার লঞ্চ, কার্গো, ষ্টীমার, ফেরী ইত্যাদি আটকে যায়নি বা নৌপথ বন্ধ হয়ে যায়নি। নাব্যতা সংকটে ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারী মাসে পটুয়াখালী বন্দরে লঞ্চ ভিড়তে পারত না বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দ্বারা ড্রেজিং এর পর ঘাটে লঞ্চ ভিড়তে কোন সমস্যা হচ্ছে না। বর্তমানে এ রুটে নির্বিঘ্নে লঞ্চ চলাচল করছে। সুতরাং পত্রিকায় প্রকাশিত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা , বানোয়াট ।

পত্রিকায় “এ ছাড়া মিয়ারচরে যে পরিমাণ ড্রেজিং দেখানো হয়েছে সেটা যদি হয়েই থাকে তাহলে দুটি লঞ্চ পাশাপাশি ক্রস করতে দুর্ঘটনা ঘটবে কেন? তিনি আরো জানান, গত ১৬ জুলাই রাত দেড়টার দিকে মিয়ারচর চ্যানেলে অপর একটি জাহাজকে সাইড দিতে গিয়ে পারাবত-১১ সুন্দরবর-১০ লঞ্চের বাম পাশে আঘাত করে। এতে লঞ্চটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন এবং যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তিনি আরো অভিযোগ করেন, সংস্থাটির ড্রেজিং বিভাগ থেকে ২০১৮-১৯ইং সালে যে পরিমাণ ড্রেজিং করা হয়েছে দেখিয়েছে তা পুরোপুরি অসত্য। যার প্রমাণ পানি একটু কমলেই সবার সামনে প্রতিবারের ন্যায় এবারো উন্মোচিত হবে। আর তখন যেসব জায়গায় ড্রেজিং করা হয়েছে বলা হচ্ছে, সেখানেও লগি দিয়ে পানি মেপে মেপে লঞ্চ চালাতে হবে বলে তিনি দাবি করেন। দক্ষিণাঞ্চলের কোন রুটেই ড্রেজিং হয়নি বলে দাবি করেছেন এইসব রুটে চলাচলকারী লঞ্চের মাস্টার ড্রাইভাররাও” প্রকাশ করা হয়েছে।

যা অসত্য, কারণ “মোংলা হতে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশি পর্যন্ত নৌরুটের নাব্যতা উন্নয়ন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মিয়ারচর এলাকায় প্রায় ১০.০০ লক্ষ ঘনমিটার এবং সংরক্ষণ খননের আওতায় বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ড্রেজার দ্বারা ১.৯০ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে। মিয়ারচরে প্রায় ১২০ মিটার প্রশস্ত এবং ৫মিটার গভীরতায় ড্রেজিং হয়েছে। চ্যানেলে একটি কার্গো ডুবে গেছে কিন্তু তার পাশ দিয়েও লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। আগামী শুস্ক মৌসুমে পুনরায় ড্রেজিং-এর প্রয়োজন হবে।

পত্রিকায় আরও প্রকাশ করা হয়েছে “একই অবস্থা উত্তরাঞ্চলের ভৈরব-চামড়াঘাট-মিঠামইন নৌপথের। এ রুটের সুরমা নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ঘনমিটার, ভৈরববাজর-লিপসা-ছাতক-সিলেট নৌপথের সুরমা নদীতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ড্রেজার দিয়ে ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ঘনমিটার, গাগলাজোড়া-মোহনগঞ্জ নৌরুটের কংসা নদীতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ড্রেজার দিয়ে ৬ লক্ষ ১৩ ঘনমিটার, দিলালপুর-চামড়াঘাট-নিকলি-নেত্রকোনা নৌপথের বাউলাই, সুরমা ও মগরা নদীতে বেসরকারি ড্রেজিং দিয়ে ৬ লক্ষ ১৪ হাজার ঘনমিটার, চিত্রি-নবিনগর-গোকর্নঘাট-কুটিবাড়ি নৌরুটের মেঘনা, পাগলা ও বুড়ি নদীতে বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ঘনমিটার ড্রেজিং করার তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে ড্রেজিং বিভাগ থেকে, কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সিলেট জোনের লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সংস্থাটি যেসব নদীতে ড্রেজিং করা হয়েছে দেখিয়েছে তা সঠিক নয়। আর ড্রেজিং বিভাগের তথ্য যে অসত্য, তা যেসব এলাকায় ড্রেজিং করা হয়েছে বলা হচ্ছে সেখানকার সাধারণ মানুষ ও ওই রুটে চলাচলকারী নৌযানের মাষ্টার ড্রাইভারদের সাথে আলাপ করলেই জানা যাবে। তিনি বলেন, ড্রেজিং বিভাগের সাথে লঞ্চ মালিকদের কোন বিরোধ নেই। কিন্তু নদীতে ডুবোচর থাকলে হঠাৎ তাতে ধাক্কা লেগে লঞ্চ ডুবে যেতে পারে। আর এ জন্য সাধারণ যাত্রী হতাহতের ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার লঞ্চ মালিকদের নিতে হয়” যা মোটেই সঠিক নয়। উল্লেখ্য উত্তরাঞ্চলের ভরৈব-চামড়াঘাট-মিঠামইন, সুরমা, লিপসা-ছাতক, গাগলাজোড়া-মোহনগঞ্জ, দিলালপুর-চামড়াঘাট-নিকল-নেত্রকোণা, বাউলাই, সুরমা, মগড়া মেঘনা, পাগলা ও বুড়ি এ নদীগুলো খননের পূর্বে নাব্যতা সংকটে শুস্ক মৌসুমে জাহাজ চলাচল করতে পারতো না। কিন্তু খননের পরে নদীতেগুলোতে সারা বছর এমনকি শুস্ক মৌসুমেও ফুল লোডে জাহাজ চলাচল করতে পারছে। সুরমা নদীর ভৈরব-লিপসা-ছাতক নৌ-পথের নাব্যতা সংকট চিহ্নিত ৮টি স্থানের নাব্যতা সংকট থাকায় শুস্ক মৌসুমে অর্ধেক লোড নিয়ে জাহাজ চলাচল করত, ঐ জায়গাগুলো ড্রেজিং-এর পর গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে শুস্ক মৌসুমে ফুললোড নিয়ে কার্গো চলাচল করেছে। এছাড়া সুরমা, লিপসা-ছাতক,গাগলাজোড়া-মোহনগঞ্জ, দিলালপুর-চামড়াঘাট-নিকল-নেত্রকোণা, বাউলাই, সুরমা, মগড়া মেঘনা, পাগলা ও বুড়ি নদীগুলোর যেসব স্থানে নাব্যতা সমস্যা রয়েছে সেখানে ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যে স্থানগুলোর ড্রেজিং কাজ সমাপ্ত হয়েছে তা দিয়ে সারা বছর এমনকি শুস্ক মৌসুমেও ফুল লোডে জাহাজ চলাচল করতে পারছে। ড্রেজিং শুরুর পূর্বে বিআইডব্লিউটিএ’র হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ তাদের অভিজ্ঞ জনবলের মাধ্যমে ইকো-সাউন্ডার দ্বারা হাইটেক সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফি জরিপ করেন। জরিপ ডাটা আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকে, উক্ত ডাটা যে কেউ যে কোন সময় সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পারবে। ড্রেজিং এর পর অনুরূপ পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফি জরিপ করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ড্রেজিং পূর্ব এবং ড্রেজিং পরবর্তী হাইড্রোগ্রাফি চার্ট এবং তাদের কাছে দৈনন্দিন তথ্যের ভিত্তিতে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে ড্রেজিংকৃত মাটির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে এবং সে অনুযায়ী বিল প্রদান করা হয় এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।

পত্রিকায় “জানা গেছে শুধু যাত্রীবাহী নৌরুটেই নয়, ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচলকারী চাঁদপুর-ইচলী-হবিগঞ্জ রুটের ডাকাতিয়া নদীতে বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার ঘনমিটার, কটিয়াদী-ভৈরব নৌরুটের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে ১৩ লক্ষ ৩ হাজার ঘনমিটার ও ডহুরী-তালতলা রুটের তালতলা কলে বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে ৮৭ হাজার ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে বলে ড্রেজিং বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে। তবে বাস্তবে এ তথ্যও ঠিক নয় বলে দাবী করেছেন এসব রুটে চলাচলকারী মালবাহী ইঞ্জিন বোটের মাষ্টার ড্রাইভাররাও” প্রকাশ করা হয়েছে যা একেবারেই সত্য নয়। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। কারণ চাঁদপুর-ইচুলী-হবিগঞ্জ রুটের ডাকাতয়িা নদী, কটিয়াদী-ভৈরব নৌরুটরে পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্র নদে ও ডহুরী-তালতলা রুটের তালতলা খালে ড্রেজিং এর পূর্বে শুস্ক মৌসুমে কোন পানি থাকত না প্রায় মরেই গিয়েছিল। ড্রেজিং পরবর্তী গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এ সব নদী দিয়ে সারা বছরই এমনকি শুস্ক মৌসুমেও ফুল লোডে কার্গো চলাচল করেছে। ড্রেজিং শুরুর পূর্বে বিআইডব্লিউটিএ’র হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ তাদের অভিজ্ঞ জনবলের মাধ্যমে ইকো-সাউন্ডার দ্বারা হাইটেক সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফি জরিপ করেন। জরিপ ডাটা আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকে, উক্ত ডাটা যে কেউ যে কোন সময় সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পারবে। ড্রেজিং এর পর অনুরূপ পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফি জরিপ করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ড্রেজিং পূর্ব এবং ড্রেজিং পরবর্তী হাইড্রোগ্রাফি চার্ট এবং তাদের কাছে দৈনন্দিন তথ্যের ভিত্তিতে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে ড্রেজিংকৃত মাটির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে এবং সে অনুযায়ী বিল প্রদান করা হয় এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।

পত্রিকায় আরও প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘ড্রেজিং খাতের অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, লঞ্চ মালিক বা মাষ্টার ড্রাইভারদের অভিযোগ ঠিক নয়। উজানের পলিমাটিই বড় সমস্যা। কোনো কোনো জায়গায় ড্রেজিং করার একদিন পরও আবার পলি পড়ে ভরাট হয়ে যেতে পারে। এটা ড্রেজিং বিভাগের দোষ নয়’
অথচ প্রধান প্রকৌশলী জনাব মোঃ আব্দুল মতিনের সাথে ঐ সাংবাদিকের কোন আলাপই হয়নি। এভাবে কারো সাথে আলাপ না করে অনুমান নির্ভর অসত্য, বানোয়াট, বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশ করা তথ্য অধিকার আইনের পরিপন্থি।

এমতাবস্থায়, গত ০৩/০৮/১৯ তারিখে “নয়া দিগন্ত” পত্রিকায় “নৌপথে ড্রেজিং কাগজে আছে বাস্তবে নেই” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যগুলো সত্য নয়, সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন বিআইডব্লিউটিএ সম্বন্ধে জনমনে বিভ্রান্তি ও বিরূপ ধারনা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে বিআইডব্লিউটিএ পরিবেশিত সংবাদের উপর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন