এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারী এড়িয়ে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চাইনীজ ড্রেজিং কোম্পানীর অর্থ পাঁচারঃ ঠিকাদারী ব্যবসার নীতিমালা উপেক্ষিতঃ পানি সম্পদ ও নৌ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা

  24-06-2021 05:29PM

পিএনএস (মোঃ শাহাবুদ্দিন শিকদার) : দেশের ড্রেজিং সেক্টরে কিছু সংখ্যক বিদেশী কোম্পানী আর্থিক শৃঙ্খলা এবং দরপত্রের বিধি-বিধান ভঙ্গ করে বেআইনীভাবে ঠিকদারী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু সংখ্যক প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক এই সমস্ত কোম্পানীকে সহযোগিতা করে নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।

সূত্রমতে, আলোচিত বিদেশী ড্রেজিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি ড্রেজিং কোম্পানী চীন থেকে আগত। এই কোম্পানীটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যাপিটাল ড্রেজিং পাইলট প্রজেক্টের কাজ করতে বাংলাদেশে এসেছিল। কোম্পানীটি বাংলাদেশে আসার সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটিজের শুল্ক সুবিধার আওতায় আয়করসহ বিভিন্ন রাজস্ব রেয়াতের সুবিধা নিয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রজেক্ট শেষ হলেও চাইনীজ কোম্পানীটি এনবিআর এর প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটিজের লোকজনকে ম্যানেজ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে এনবিআর বিপুল অংকের রাজস্ব হারালেও চাইনীজ কোম্পানীটি বেআইনী ভাবে লাভবান হচ্ছে। পাশাপাশি, তারা কিভাবে অর্জিত টাকা তাদের দেশে নিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, যথাযথ অনুমোদন না থাকায় তাদের দেশে টাকা প্রেরণকালে হুন্ডির মাধ্যম ব্যবহার করছে যা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিবদ্ধ আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী বিধায় তা অর্থ পাঁচার হিসেবে পরিগণিত।

ভুক্তভোগীমহল জানায়, বাংলাদেশের বিকাশমান ড্রেজিং কোম্পানীগুলো ড্রেজিং সেক্টরে ঠিকাদারী কাজে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে অংশগ্রহণ করে আয়কর, ভ্যাটসহ অন্যান্য রাজস্ব প্রদান করে যাচ্ছে। অথচ চাইনীজ ড্রেজিং কোম্পানীটি নানাবিধ আয়কর রেয়াতের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছে। এতে ড্রেজিং সেক্টরে ঠিকাদারী কাজে অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হচ্ছে যা কাঙ্খিত নয়।

সূত্রমতে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এনবিআরের প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটিজ শাখা চাইনীজ কোম্পানীটির এই সমস্ত অনিয়ম তদন্তে একটি নথি চালাচালি করলেও তদবিরবাজদের হস্তক্ষেপে তা রহস্যজনক কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট এবং এনবিআরের সিআইসি ইউনিট এ ব্যাপারে অদ্যাবধি চাইনীজ কোম্পানীটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

অভিজ্ঞমহল এ ব্যাপারে চাইনীজ কোম্পানীটির কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটিজ শাখা, এনবিআরের সিআইসি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন