ধামরাইয়ে অশীতিপর বৃদ্ধা খুন; স্বামীর অবস্থা আশঙ্কাজনক

  25-08-2016 06:22PM

পিএনএস ডেস্ক : ঢাকার ধামরাইয়ে নৃশংসভাবে আশি বছরের এক বৃদ্ধাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা ও তার স্বামীকে একই কায়দায় হত্যার চেষ্টা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর নিহতের নাতিসহ দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে সুতিপাড়া ইউনিয়নের বালিথা গ্রামের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফটু মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

আটক জুয়েল হোসেন (৩০) হলেন নিহত রজ্জুবুন্নেছা (৮০) ও আহত ফালুজ উদ্দিন বেপারীর (৯৩) মেয়ের ঘরের নাতি। তার বাবার নাম আবুল হোসেন। আটক অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি। হামলায় আহত ফালুজ উদ্দিন বেপারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। থানা পুলিশ ধারনা করছে, বৃদ্ধ দম্পতির জমি-জমা বা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাদেরই কোনো নিকট আত্মীয় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

নিহত বৃদ্ধার ছেলে ফটু মিয়া জানান, অনেক দিন ধরেই বাবা-মা তাদের ছেড়ে নিজেদের অন্য জায়গায় টিনসেডের আধাপাকা বাড়িতে আলাদা বসবাস করেন। প্রতিদিন বাবা মা ভোরে ঘুম থেকে উঠলেও বৃহস্পতিবার অনেক বেলা হয়ে যাওয়ার পরও ঘরের দরজা না খুললে সন্দেহ হয় তাদের। পরে ঘরে প্রবেশ করে বৃদ্ধ বাবা ফালুজ উদ্দিনকে বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা। তার মুখে বালিশ চাপা দেওয়া ছিল। এরপ মা রজ্জুবুন্নেছাকে অনেক খুঁজে দুই তলার একটি কক্ষে ফিজের একটি কার্টনের ভিতর কাথা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। এর আগেই দ্রুত তার বাবাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। তবে এর আগেই তার মা মৃত্যুবরণ করেন বলেও জানান তিনি।

ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিজাউল হক বলেন, মূলত সম্পত্তি নিয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নাতী জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে নানা-নানীর সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে তাদের চাপ দিয়ে আসছিল। কোনো উপায়েই সম্পত্তি না পেয়ে মাদকাসক্ত জুয়েল একাই অথবা তার সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

এ ঘটনার পর ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমানসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহত ওই বৃদ্ধার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, “ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর। আমরা হত্যাকান্ডের আলামত সংগ্রহকালে বাড়িটিতে ডাকাতির কোন ক্লু প্রাথমিক ভাবে পাইনি। আর হত্যাকান্ডের মোটিভ দেখে এটি পরিকল্পিত ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা নিহতের স্বজনসহ দুই জনকে আটক করেছি।”

এছাড়া ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও হাসপাতালে সঙ্গাহীন আহত বৃদ্ধ ফালুজ বেপারীরর জ্ঞান ফিরলে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ নাছির উদ্দিন জানান, ফালুজ উদ্দিনের গলার একটু নিচে ও পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।




পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন