এসিড সন্ত্রাস!

  01-10-2016 01:06PM


পিএনএস : আবারও এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে। হঠাৎ করে দেশে এসিড হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে। আর এই সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন বেশিরভাগই নারীরা।

সোমবার ভোরে চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড এলাকায়একটি বস্তিতে ঘুমন্ত অবস্থায় এসিডে দগ্ধ হন শেলী আক্তার ও তার মা হোসনে আরা বেগম। অভিযোগ উঠেছে, শেলির প্রাক্তন স্বামী অটোরিকশাচালক মো. জাহাঙ্গীর এ কাজ করেছেন। স্ত্রী তালাক দেওয়ায় প্রতিশোধ হিসেবে তিনি এ কাজ করেছেন । শুধু শেলী নন, গত আগস্ট পর্যন্ত এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৩৩ জন। গত ৫ আগস্ট পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘুমন্ত এক কিশোরীর শরীরে এসিড নিক্ষেপ করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। ২৩ আগস্ট নেত্রকোনার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের কাইটাইল গ্রামে পূর্বশত্রুতার জের ধরে নিয়াশা আক্তার ও মনোয়ারা বেগম নামের দুই নারীর ওপর এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। গত এপ্রিলে রাজধানীর মিরপুরে মুখোশধারী দুর্বৃত্তদের নিক্ষিপ্ত এসিডে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন। পরে জানা যায়, স্বামীর ভাড়াটে লোকজন এই এসিড হামলা চালিয়েছে।

বেসরকারি সংগঠন এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের হিসেব অনুযায়ী, ১৯৯৯ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০৩টি ঘটনায় ১ হাজার ৮৭৩ জন নারীসহ মোট ৩ হাজার ৬৬১ জন এসিডদগ্ধ হয়েছেন। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ২৮ টি অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসিড সন্ত্রাসের মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পেছনে মূলত বিচারে দীর্ঘসূত্রিতাই দায়ী। এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের হিসেবে ২০০২ সাল থেকে ২০১৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এই সহিংসতায় সারাদেশে দুই হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে রায় হয়েছে মাত্র ১৮৫ টি মামলার। অর্থাৎ ৮০ শতাংশেরও বেশি মামলাই এখনো বিচারের প্রহরের গুনছে। অথচ এসিড অপরাধ দমন আইন অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে এসব মামলা নিষ্পত্তি করার কথা। আইনের ফাঁক গলে কিংবা প্রভাব খাটিয়ে অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়ায় জঘন্য এই অপরাধটি ক্রমশ বেড়ে চলেছে।

এসিড সন্ত্রাসের শেকড় সমাজ থেকে উপড়ে ফেলতে হলে এর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রচার জোরদার করতে হবে। এর পাশাপাশি, অ্যাসিড সন্ত্রাস দমনে দেশে যে কঠোর আইন রয়েছে তার যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন