ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের দাম

  04-12-2016 12:15PM

পিএনএস ডেস্ক:রাজধানীর পাইকারি বাজারে ঊর্ধ্বমুখী আছে ভোজ্যতেলের দাম। পাঁচদিনের ব্যবধানে রাজধানীর পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও সুপার পাম তেলের দাম বেড়েছে মণে ১০০-১৩০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা দেশে ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

রাজধানীর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাঁচদিন আগে তাদের বাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হয় প্রতি মণ ৩ হাজার ১০০ টাকায়, যা এখন ৩ হাজার ২৩০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। অর্থাত্ এ সময়ের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে মণে ১৩০ টাকা।

এদিকে পাঁচদিন আগে সুপার পাম অয়েল বিক্রি হয় প্রতি মণ ২ হাজার ৬৬০ টাকায়। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭৬০ টাকায়। এ হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৭১ টাকা ২৮ পয়সা থেকে ৭৩ টাকা ৯৫ পয়সা। অর্থাত্ এ সময়ের ব্যবধানে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণে ১০০ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শীতকালে পাম তেল জমে যায়। ফলে চাপের মুখে থাকে সয়াবিন তেলের বাজার। আর এ সুযোগে ব্যবসায়ীরাও পণ্যটির দাম বাড়িয়ে থাকেন। দেশের জনগোষ্ঠীর বিরাট একটা অংশ খোলা তেল ব্যবহার করেন। আর একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মোটা অংকের মুনাফা করতে সুপার পাম অয়েলকে সয়াবিন ও পাম অয়েলকে সুপার পাম অয়েল বলে বিক্রি করে থাকেন। তবে পাম অয়েল জমে যাওয়ায় শীতকালে ব্যবসায়ীদের কারসাজি ধরা পড়ে যায়।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাজারগুলোয় খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে প্রতি লিটার ৮৪-৮৬ টাকায়, যা এক বছর আগে ছিল ৭৫-৭৯ টাকা। আর এদিন সুপার পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৭২-৭৪ টাকায়। এক বছর আগে যা ৬২-৬৫ টাকায় লেনদেন হয়েছিল।

বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বণিক বার্তাকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে প্রভাব পড়েছে। আবার অনেকে গুজবেই সয়াবিন ও সুপার পাম তেলের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

ইনডেক্স মুন্ডি ডটকম সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি বছরের এপ্রিলে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৭৪৮ ডলার, মে মাসে ৭০৭, জুনে ৭০৩, জুলাইতে ৬৬৯, আগস্টে ৭১১, সেপ্টেম্বরে ৭২২ এবং অক্টোবরে ৭৫৭ ডলার। অন্যদিকে এ বছরের এপ্রিলে প্রতি টন পাম অয়েলের দাম ছিল ৬৮০ ডলার, মে মাসে ৬৪৪, জুনে ৬১৮, জুলাইতে ৫৮৪, সেপ্টেম্বরে ৬৯২ এবং অক্টোবরে ৬৫১ ডলার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের সার্বিক চাহিদা প্রায় ১৫-১৮ লাখ টন। আর এর বিপরীতে দেশে উত্পাদন হচ্ছে মাত্র দুই-চার লাখ টন। চাহিদার অধিকাংশ তেলই আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৩ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছর দেশে ১২ হাজার ৪০৬ কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন